পাকিস্তানের এখন অর্থনীতি পুরোপুরি ঋণনির্ভর এবং এটি একপ্রকারে বিচ্যুতির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অর্থনীতি ভেন্টিলেটরের ওপর বেঁচে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. কায়সার বাঙালি। বুধবার পাকিস্তানের শ্রম শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত বাজেট-পূর্ব এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় পাকিস্তানের আসন্ন বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেন এ অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধিতে নিম্নহার এবং অনিশ্চয়তাই পাকিস্তানের অর্থনীতির প্রধান সমস্যা। এ দেশের বাজেটের বেশিরভাগ অংশই চলে যায় ঋণ পরিষেবায়, এরপর প্রতিরক্ষা খাতে।
ড. কায়সার বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতি হচ্ছে খরচকেন্দ্রিক, উৎপাদনকেন্দ্রিক নয়। যদি বিদ্যুৎ খরচের দিকে তাকাই, দেখা যাবে- সেটি গৃহস্থালী খাতে বাড়লেও শিল্প খাতে কমে গেছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের রফতানির তুলনায় আমদানি দ্বিগুণেরও বেশি এবং সিংহভাগ আমদানি হচ্ছে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্য। এমনকি পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা পোষাপ্রাণীর খাদ্যও আমদানি করছে।
এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে পাকিস্তানের স্থানীয় কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে শিল্প-কারখানার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেন এ বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানে প্রস্তুতকারক খাতের ব্যাপক সম্প্রসারণ হতে হবে, যেন নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হয়। দেশীয় ব্যবসায় নামমাত্র ঋণ সরবরাহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনতে পারবে না। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পাকিস্তানের প্রস্তুতকারক সম্পদ কমে যাচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে।
এছাড়া পাকিস্তান সরকারের ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির ঘোষণাতেও সন্দিহান ড. কায়সার বাঙালি। সরকার বাজেটের আগে অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রকাশ করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।