ইজরায়েল প্রশাসন তাদের দেশকে করোনামুক্ত ঘোষণা করল। ওই দেশে ৬০% মানুষের করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়া হয়ে গেছে। বিশ্বে এটা একটা নজির বলে ওই দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল হেজি লেভি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “১৮ এপ্রিল থেকে ওই দেশে বাইরে মাস্ক না পরে বার হলেও কোনও সমস্যা নেই।”
গত জানুয়ারির মাঝামাঝি ইজরায়েলে মাথাপিছু করোনা সংক্রমণ বিশ্বের নিরিখে সবচেয়ে বেশি ছিল। তাহলে কী করে তারা এই জায়গায় পৌঁছতে পারল? আসলে ২০২০-র ১৯ ডিসেম্বর ইজরায়েলে ফাইজারের ভ্যাকসিন পৌঁছনোর দু’সপ্তাহের মধ্যেই ওই দেশে ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়। ২০২০-র শেষার্ধে ভ্যাকসিন উৎপাদকদের সঙ্গে ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করে নেয় ওই দেশে। লক্ষ্য একটাই ভ্যাকসিন যাতে দেশে কম না পড়ে । ২০২০-র জুন মাসে মডার্না নামক ভ্যাকসিন উৎপাদক সংস্থার সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি হয় তাদের । এর পরেই ফাইজার ও সঙ্গে চুক্তি করে তারা । এর পর ২০২১-র মার্চের মাঝামাঝি সময় দেশের ৪৮% মানুষের ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ হয়। এর পড়েই ওই দেশের মানুষেরা নির্ভয়ে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় চলাচলের সুযোগ পেয়ে যান।
ভৌগোলিক কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় ইজরায়েলে ভ্যাকসিন পরিবহন ও সংরক্ষণে সুবিধা রয়েছে। মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল। ওই দেশে ভ্যাকসিনেশন নীতি এমন ছিল যাতে যাদের ভ্যাকসিন খুব প্রয়োজন তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় পরিবারের অন্যদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সেই দেশের সরকার মাথায় রেখেছে করোনা থেকে দেশকে কি করে দ্রুত মুক্ত করা যায় সেই বিষয়টি।
ইজরায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্বাস্থ্যনীতির ক্ষেত্রে নির্দেশ দিয়েছিল কোন সংস্থা কাদের ভ্যাকসিন দেবে। লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্ট সংখ্যায় বিভিন্ন ভ্যাকসিন কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়া। ভ্যাকসিন নেওয়া যাদের হয়েছে, যাদের একবার করোনা হয়ে গেছে, তাদের চিহ্নিত করার জন্য গ্রিন পাসপোর্ট নামক মোবাইল app তৈরি করা হয়েছে। যারা গ্রিন পাসপোর্ট পেয়েছেন তারা জিম, সুইমিং পুল , সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন। যারা গ্রিন কার্ড ছাড়া এই সব জায়গায় যাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
১৬ বছরের উপরে যারা রয়েছে তারা ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়েছেন, এই সংখ্যাটা ১৬ বছরের উপরের জনসংখ্যার ৮১%। এর ফলে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, স্কুলগুলোও খুলে গেছে।