প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
আগামীকাল মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয় হলে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর রয়টার্সের।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান নেতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও মার্কিন নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
রিপাবলিকানরা অভিযোগ করেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষিতে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করেছে। এছাড়া দেশজুড়ে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। এসব কারণে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া ও নেভাডায় সিনেটে হেরে যেতে পারে ডেমোক্র্যাটরা।
এর আগে নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডায় পৃথক সমাবেশে বক্তব্য দেন বাইডেন ও ট্রাম্প। সমাবেশে বাইডেন বলেন, জ্বালানি শক্তিতে ভারসাম্য আনতে প্রণোদনা দেয়া, ভাঙাচোরা সড়ক ও সেতু নির্মাণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি। এরপরও মধ্যবর্তী নির্বাচনে আমরা পিছিয়ে যেতে পারি।
বাইডেন সতর্ক করেছেন, অনেক রিপাবলিকান প্রার্থী ২০২০ সালে নির্বাচন সম্পর্কে ট্রাম্পের মিথ্যা দাবির ধোয়া তুলে গণতান্ত্রিক নিয়মের হুমকি দিচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটির উত্তরে সারাহ লরেন্স কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বাইডেন বলেন, গণতন্ত্র আক্ষরিক অর্থেই ব্যালটে রয়েছে। আপনি জিতলেই দেশকে ভালবাসতে পারবেন না।
মিয়ামিতে একটি সমাবেশে আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, আমাকে সম্ভবত আবারও নির্বাচন করতে হবে। আমার সঙ্গে থাকুন। সে সময় দেশজুড়ে অপরাধ বৃদ্ধি, সহিংসতা এবং বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার জন্য বাইডেন প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
এখন পর্যন্ত মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট দলের সমর্থন প্রায় সমানই মনে হচ্ছে। যদিও একেবারে শেষ দিকের জরিপগুলো বলছে, রিপাবলিকানরা হয়ত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। ২০১৮ সালে তারা ডেমোক্রেটদের কাছে এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল।
ফাইভথার্টিএইট-এর জরিপ বলছে, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিভে রিপাবলিকানরা ২১৫ থেকে ২৪৮ আসন পাবে। এই সংস্থাটি তার নির্বাচন নিয়ে জরিপের জন্য পরিচিত।
তারা বলছে, ডেমোক্রেটদের প্রধান টার্গেট রিপাবলিকানদের কাছ থেকে পেনসিলভানিয়া নিয়ে নেয়া। অপরদিকে রিপাবলিকানরা ডেমোক্রেটদের থেকে জর্জিয়া ও নেভাডা নিয়ে নেয়ার লক্ষ্য হাতে নিয়েছে। যদি ডেমোক্রেটরা সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তাহলে আগামী দুই বছর প্রেসিডেন্টের পক্ষে তেমন কোনো আইনই পাশ করা সম্ভব হবে না। ভোটাররা ৫০ প্রদেশের ৩৬টিতে গভর্নর নির্বাচিত করতেও ভোট দেবেন। এরমধ্যে ২০টিতে ক্ষমতায় আছে রিপাবলিকানরা এবং ১৬টিতে ক্ষমতায় আছে ডেমোক্রেটরা। এই গভর্নর নির্বাচনের প্রভাব পড়বে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও।
ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কাছে সবথেকে গুরুত্ব পাচ্ছে অর্থনীতি। ৭৯ শতাংশ ভোটারই বলেছেন, এবার তারা কাকে ভোট দেবে তা নির্ধারণে অর্থনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। সর্বশেষ মাসগুলোতে অর্থনীতি নিয়ে মার্কিনিদের চিন্তাভাবনা ছিল বেশ নেতিবাচক। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর নিজের অর্থনীতিই চাপে পড়েছে। জ্বালানী এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সার্বিক মূল্যস্ফীতির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন মার্কিন ভোটাররা।
এনজে