রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইইউর
আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইইউর

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন

ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর উপর মোট পাঁচ বার একগুচ্ছ কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। এবার ষষ্ঠ দফার নিষেধাজ্ঞার খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এর আওতায় আগস্ট মাসের মধ্যেই রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার তোড়জো়ড় করছে ইইউ কমিশন।

হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার আপত্তি সত্ত্বেও সেই উদ্যোগ ধীরে ধীরে স্পষ্ট রূপ পাচ্ছে। এই দুই দেশ সমুদ্র উপকূলের অভাবে সহজে পেট্রোলিয়ামের বিকল্প উৎসের নাগাল না পাওয়ায় আপাতত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যেতে কিছু ছাড় পেতে পারে। নিয়ম মেনে সর্বসম্মতিক্রমে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর লক্ষ্যে বুধবার থেকে ইইউ রাষ্ট্রদূতরা ব্রাসেলসে আলোচনা শুরু করছেন। ঐক্যমত অর্জিত হলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চায় ইইউ। খবর ডয়েচে ভেলের।

কড়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা সামলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাবার আর্থিক বল পাচ্ছেন, তার পেছনে জ্বালানি রপ্তানি বাবদ আয় একটা বড় ভূমিকা পালন করছে। সিআরইএ নামের এক সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পরেও ইইউ দেশগুলি রাশিয়া থেকে প্রায় ৪,৪০০ কোটি ইউরো মূল্যের জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি কিনেছে। ব্র্যুগেল নামের আর এক সংগঠনের সূত্র অনুযায়ী ইইউ এখনো প্রতিদিন রাশিয়া থেকে ৪৫ কোটি ইউরো মূল্যের পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন দফার নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আরও কিছু কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ‘সবেরবাংক’ ও অন্য দুটি ব্যাংক এই তালিকায় রয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা ডিপিএ দাবি করছে। সে ক্ষেত্রে এই ব্যাংকগুলি আর আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য ‘সুইফট’ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া খবর পরিবেশনের জন্য দুটি টেলিভিশন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানি বন্ধ করলে ইউরোপকেও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে বলে বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকরা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন। জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর রোব্যার্ট হাবেক বলেন, বিকল্প উৎস থেকে যে তেল আমদানি করতে হবে, তার মূল্য অনেক বেশি। তাছাড়া বর্তমানে ইউরোপে শোধনাগার, পাইপলাইন ও তেল সরবরাহের যে নেটওয়ার্ক আছে, তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। ফলে শেষ পর্যন্ত পেট্রোল-ডিজেলের মূল্য আরও কতটা বাড়বে, তা বলা কঠিন। আগামী শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তেলের দামও বাড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। জার্মানির মতো দেশের সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু সাময়িক পদক্ষেপ নিলেও অর্থনীতির উপর দীর্ঘমেয়াদী ধাক্কার আশঙ্কা রয়েছে। করোনা সংকটের সময়ে ইইউ যেভাবে সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও তেমন পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি।

ডি-ইভূ

Source link

Related posts

খারকিভে লাগাতার রকেট হামলা, নিহত ১৫

News Desk

পারমাণবিক স্থাপনায় ‘হামলাকারীর’ নাম জানাল ইরান

News Desk

পাকিস্তানের রাজনীতিতে আরও কোণঠাসা ইমরান

News Desk

Leave a Comment