বুধবার সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে ভোট শুরু হয়। ভোটারদের খুব উৎসাহের সঙ্গেই ভোট দিতে দেখা গেছে। রাজধানী দামেস্ক, হাসাকা, নাবল, আয-যাহরা ও দেইর আয-যোর সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি ছিল।
এবারের নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদসহ তিনজন প্রার্থীর মধ্যে লড়াই চলছে। বুধবার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দামেস্কের দুমা শহরে ভোট দিতে দেখা গেছে। এই নির্বাচনেও আসাদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি বলে বিভিন্ন জরিপ সংস্থা জানিয়েছে।
দেশটির বিরোধীদলগুলো ও পশ্চিমা দেশগুলো এই নির্বাচনকে আসাদের ক্ষমতা সংহত করার হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে। এই নির্বাচনে আসাদের বিরুদ্ধে যে দু’জন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন তারা খুব একটা পরিচিত নয় বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভোট দিতে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে নির্বাচিত করতে এসেছি, তাকে ছাড়া সিরিয়া আর সিরিয়া থাকবে না। এবার নির্বাচনে জয় লাভ করলে বাশার আল-আসাদ চতুর্থবারের মতো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। ফলে সিরিয়ায় তার ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হতে যাচ্ছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ করেন বাশার আল আসাদ। ২০১১ সালে আসাদের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পর তা সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ব্যাপক যুদ্ধের রূপ নেয়। এক দশক ধরে চলা এ যুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তবে বাশার আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকার ও সেনাবাহিনী বলছে, তারা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সফল হয়েছে। তাদের দাবি, এক দশক ধরে চলা যুদ্ধ-সংঘাতের পরেও সিরিয়া যে স্বাভাবিকভাবে চলছে এই নির্বাচন তা তুলে ধরেছে।
নির্বাচনের দিন আসাদের বিরোধিতা করে বহু মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ইদলিব প্রদেশে জুতা হাতে আসাদ এবং এই নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ।
নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে বেশ কয়েকদিন বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে এবং লোকজনকে ভোট দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভোট দিতে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।