জর্জ ফ্লয়েডের হত্যায় পুলিশের বিরুদ্ধেই আইন লঙ্ঘন করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল আগে। এ বার হত্যায় অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে চিকিৎসকেরা জানালেন, কৃষ্ণাঙ্গ ওই তরুণ হদ্রোগে আক্রান্ত ছিলেন বা মাদক সেবন করেছিলেন ঠিকই, তবে সেগুলি তাঁর মৃত্যুর ‘প্রত্যক্ষ কারণ’ না। মুখ্য ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অ্যান্ড্রু বেকার আদালতে জানিয়েছেন, ঘাড়ে প্রবল চাপ দেওয়ার ফলেই মৃত্যু হয় ফ্লয়েডের।
গত মে মাসে মিনিয়াপোলিসে ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড ঘিরে উত্তাল হয় আমেরিকা। ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন। মাটিতে ফেলে ফ্লয়েডের গলায় হাটু চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের চার্জ গঠন হয় শভিনের বিরুদ্ধে। কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা মিনিয়াপোলিসের কোর্টরুমে শুক্রবার এই হাই প্রোফাইল মামলায় সাক্ষ্য দেন অ্যান্ড্রু বেকার। ফ্লয়েডের দেহের ময়নাতদন্ত এবং মৃত্যুর শংসাপত্রে সই করেছিলেন তিনিই। শুনানিতে সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি জেরি ব্ল্যাকওয়েল ও শভিনের আইনজীবী এরিক নেলসন। বেকার জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত করার আগে পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে পড়ার জন্য ফ্লয়েডের মৃত্যুর কোনও ভিডিয়ো দেখেননি তিনি। যে ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল, মৃত্যুর আগের মুহূর্তে কৃষ্ণাঙ্গ ওই তরুণ খাবি খেতে খেতে বলছেন, ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’’ রিপোর্টে বেকার জানিয়েছেন, ফ্লয়েড যে মাদক নিয়েছিল তা তাঁর মৃত্যুর কারণ নয়। ঘাড়ের উপরে মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়ায় মৃত্যু হয় ওই তরুণের। বেকার বলেছেন, ‘‘বাকি কারণগুলি কোনওটাই প্রত্যক্ষ কারণ নয়।’’
শুক্রবার শুনানিতে লিন্ডসে থমাস নামে আর এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞও জানান, ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ দেহে অক্সিজ়েনের জোগান কমে যাওয়া। যা তাঁর বুকে, পিঠে ও ঘাড়ে খুব বেশি চাপ পড়ার কারণে হয়েছিল। তিনি সাফ বলেছেন, ‘‘হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্লয়েড মারা যাননি।’’ মিনিয়াপোলিসের পুলিশ বিভাগের প্রধানও জানিয়েছেন, শভিনের কাজ তাঁদের ‘নীতি ও মূল্যবোধের’ বিরোধী। দোষী প্রমাণিত হলে ৪০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে শভিনকে।