শীতের আগমনের সাথে সাথে ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করেছে এবং ত্বকের জেল্লা কমে আসছে। উৎসবের এই সময়টাতে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখা খুবই জরুরি। যেহেতু ঠাণ্ডার প্রভাবে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়, তাই সঠিক ডায়েট মেনে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলে ত্বকের জেল্লা বজায় রাখা সম্ভব। এই প্রতিবেদনে রইল এমনই ৫টি খাবার যা নিয়মিত খেলে ত্বক থাকবে কোমল ও উজ্জ্বল।
শুষ্ক ত্বকের কারণ
ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো পুষ্টির ঘাটতি। ভিটামিন এ, সি, ডি, ই, এবং জিঙ্ক বা সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থের অভাবে ত্বক ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। ফলে ত্বক রুক্ষ এবং খসখসে হয়ে যায়। তাই শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় ভুগলে এসব পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে সাহায্য করে এমন ৫টি খাবার
১. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা ত্বক ড্রাই হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এতে ভিটামিন সি, বি৬, ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থও আছে। এই পুষ্টিগুলো ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। মিষ্টি আলু খেলে শীতকালেও ত্বক মখমলের মতো মসৃণ থাকে। রোজ অন্তত একটি করে মিষ্টি আলু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
২. দুধ জাতীয় পানীয়
যাদের অ্যাকনের সমস্যা আছে, তারা সাধারণ দুধ খেতে পারেন না। তবে সোয়া দুধ, আমন্ড দুধ বা ওট মিল্ক ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। এই দুধগুলো ভিটামিন ডি-তে পরিপূর্ণ থাকে, যা ত্বকের হাইড্রেশন এবং ময়েশ্চারাইজেশন ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই যেকোনো ধরনের দুধজাতীয় খাবার ত্বকের শুষ্কভাব দূর করতে কার্যকরী। এই দুধগুলো নিয়মিত ডায়েটে রাখলে ত্বক থাকে হাইড্রেটেড এবং ব্রণর সমস্যা থেকেও দূরে থাকা যায়।
৩. অ্যাভোকাডো
প্রতিদিনের ব্রেকফাস্টে অ্যাভোকাডো টোস্ট রাখতে পারেন। এতে ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টানা ৬০ দিন ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্ট খেলে ত্বকের শুষ্কভাব এবং চুলকানি দূর হয়। তাই অ্যাভোকাডো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর ও ত্বক উভয়ই উপকৃত হবে। এতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে এবং জেল্লাও বজায় থাকে।
৪. ফ্যাটি ফিশ
স্যামন, টুনা বা অন্যান্য ফ্যাটি ফিশে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বকের শুষ্কভাব কমাতে সহায়তা করে। ফ্যাটি ফিশ ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখে এবং মসৃণতা বৃদ্ধি করে। শীতের দিনে এ ধরনের মাছ খেলে শরীর যেমন পুষ্টি পায়, তেমনি ত্বকের জেল্লাও বজায় থাকে। তাই দুপুরের খাবারের তালিকায় ফ্যাটি ফিশ রাখলে ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল-মূল ও গ্রিন টি
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল-মূল এবং গ্রিন টি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে কার্যকর। এই ধরনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে ডিটক্স করতে এবং পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখলে ত্বক আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য পরামর্শ
ত্বকের শুষ্কভাব দূর করতে পানি পানও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক স্বাভাবিকভাবে আর্দ্র থাকে। এছাড়াও, নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার এবং সঠিক স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চললে ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
Disclaimer: এই তথ্যগুলো শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য দেওয়া হয়েছে। কোনও ধরনের চিকিৎসা বা পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া উচিত।