ত্বকের যত্নে তেল একটি অতুলনীয় উপাদান। শীতকাল হোক বা গ্রীষ্মকাল, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধে তেল ব্যবহারের কোনো জুড়ি নেই। তবে একটি সাধারণ প্রশ্ন প্রায়ই উঠে আসে—তেল কি গোসলের আগে ব্যবহার করবেন, নাকি পরে? চলুন, এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
গোসলের পরে তেল ব্যবহার কেন ভালো?
গোসলের আগে তেল মালিশ করা হলে ত্বকের ওপর তেলের কার্যকারিতা পুরোপুরি পাওয়া যায় না, কারণ এটি পানি দিয়ে ধুয়ে যায়। তবে গোসলের পরে, যখন ত্বক ভেজা থাকে, তখন তেল মালিশ করলে এটি ত্বকে সহজে শোষিত হয়। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. সিনথিয়া আলম বলেন, “গোসলের পর ভেজা ত্বকে তেল ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।”
তেল মালিশের সঠিক সময়
তেল মালিশের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ঘুমানোর আগে। রাতে গোসল করলে এর পরপরই তেল ব্যবহার করতে পারেন। দিনের বেলা গোসল করার পরও তেল ব্যবহার করা যায়। তবে মনে রাখবেন, তেল মালিশের পর যদি বাইরে যেতে হয়, তাহলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কারণ তেল মালিশের পর ত্বক রোদের ক্ষতিকর প্রভাব এবং ধুলাবালিতে বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।
তেল ব্যবহারের কিছু সতর্কতা
1.বাইরে যাওয়ার আগে তেল মালিশ করলে শরীরের সেই অংশে তেল ব্যবহার করুন, যা পোশাক দিয়ে ঢাকা থাকবে।
2.অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করবেন না। মুখের জন্য মাত্র চার ফোঁটা তেল যথেষ্ট।
তেল মালিশের পদ্ধতি
সঠিক উপায়ে তেল মালিশ করলে ত্বকের জন্য এটি আরও উপকারী হয়। তেল মালিশ করুন বৃত্তাকার গতিতে, ত্বকের নিচের অংশ থেকে ওপরের দিকে। এভাবে তেল ত্বকে ভালোভাবে শোষিত হয়।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক তেল
আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক তেল বেছে নেওয়া জরুরি।
নারকেল তেল
1.যেকোনো ত্বকের জন্য নিরাপদ। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং বয়স্কদের জন্য বিশেষ উপকারী।
জলপাই তেল
2.এটি শরীরের জন্য ভালো, তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকের জন্য এটি যথেষ্ট কার্যকর নাও হতে পারে।
3.শর্ষের তেল
হাত ও পায়ের পাতার জন্য আদর্শ।
4.জোজোবা বা আর্গন তেল
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সেরা। এটি ত্বকে আটকে থাকে না এবং ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
5.টি ট্রি তেল
ব্রণ প্রতিরোধে কার্যকর। এটি নিয়মিত ব্যবহারে বয়সের ছাপও কমায়।
কেন তেল মালিশ গুরুত্বপূর্ণ
ত্বককে আর্দ্র ও উজ্জ্বল রাখতে তেল মালিশ একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর পদ্ধতি। এটি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং বলিরেখা প্রতিরোধ করে। তবে সময় ও পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চললে তেলের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়।
আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক তেল বেছে নিয়ে নিয়মিত তেল মালিশ করুন, ত্বক থাকবে সুস্থ, কোমল ও তারুণ্যময়।