বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই সবার আগে মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ বা ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য পেট্রোলাটাম, মিনারেল অয়েল, ল্যানোলিন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিনযুক্ত ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। আর যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত বা ব্রণের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য টি ট্রি অয়েল, স্যালিসাইলিক, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড আছে, এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।
ত্বক পরিষ্কারের পর এক্সফোলিয়েশন করতে হবে। এতে ত্বকের ওপর জমে থাকা মৃত কোষ দূর হয়ে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে। বাজারে অনেক রকমের এক্সফোলিয়েশন কিনতে পাওয়া। ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল—এ দুই ধরনের এক্সফোলিয়েটর ছেলেরা ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেটা সপ্তাহে একবার।
চাইলে ঘরেই সামান্য কিছু উপাদান দিয়ে ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বা স্ক্রাব বানানো যায়। এ জন্য দরকার হবে দুই চামচ মিহি গুঁড়া কফি ও দেড় চামচ অলিভ অয়েল। দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে পাঁচ মিনিট। এরপর পাঁচ মিনিট ভালোভাবে ম্যাসাজ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ঈদে ছেলেদের ত্বক প্রস্তুতি
শেভিং নিয়ে অনেক ছেলেই সমস্যার সম্মুখীন হন। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য সঠিকভাবে শেভ করাটা জরুরি। সঠিক মানে কিন্তু কঠিন নয়। অল্প কিছু দিকে খেয়াল রেখেই সহজে কোনো ঝামেলা ছাড়া ভালোভাবে শেভ করা সম্ভব।
• শেভের আগে ত্বক পরিষ্কার ও এক্সফোলিয়েশন করে নিতে হবে।
• অনেকের শেভের পর কিছু চুল বাঁকা হয়ে ত্বকের নিচে থেকে যায়। এর ফলে ত্বকে লালচে উঁচু বাম্প বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। শেভের আগে ত্বকে প্রি-শেভ অয়েল ব্যবহার করলে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে। ঘরেই প্রি-শেভিং অয়েল বানানো যাবে। এ জন্য লাগবে দুই চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ অলিভ অয়েল, দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল।
• কখনোই ড্রাই শেভ করা যাবে না। শেভের আগে ত্বক ভিজিয়ে নিতে হবে।
• খুব ধারালো, সিঙ্গেল ব্লেডেড সেফটি রেজর ব্যবহার করা সবচেয়ে উত্তম।
• দাড়ি যেদিকে বাড়ে, সেদিকে শেভিংয়ের স্ট্রোক দেওয়া জরুরি।
• প্রতিটি স্ট্রোকের পর কুসুম গরম পানিতে খুব ভালোভাবে রেজরটা বারবার ধুয়ে নিতে হবে।
• কোনো তাড়াহুড়া ছাড়া, একটু সময় নিয়ে শেভ করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। বেশি সময় নিয়ে শেভ করা ত্বকের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী।
• অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের শেভিং ক্রিম বা জেল ও আফটার শেভ লোশন বা বাম ব্যবহার করতে হবে। ত্বক সেনসিটিভ হলে ফ্র্যাগরেন্স ফ্রি প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে।
ঈদের আগে দাড়ির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সুন্দর, পরিপাটি ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দাড়ির জন্য খুব একটা খাটাখাটনির দরকার পড়ে না। যাঁদের দাড়ি রয়েছে, তাঁরা অন্য সবার মতোই ক্লিনজার ও স্ক্রাব ব্যবহার করবে। এক্সফোলিয়েটর হিসেবে ছোট ব্রিসেলের বিয়ার্ড ব্রাশ হলেই চলবে। বিয়ার্ড্রাফ থাকলে টক্সিন ফ্রি মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর নরম দাড়ি পেতে চাইলে রোজ রাতে ঘরে তৈরি বিয়ার্ড অয়েল লাগাতে। এ ক্ষেত্রে প্রি-শেভ অয়েলটাই বিয়ার্ড অয়েল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
এই গরমেও ত্বক হারাতে পারে আর্দ্রতা। এটি ধরে রাখতে অন্য সব সময়ের মতোই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বক সুস্থ-স্বাভাবিক দেখাবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম বেজড লাইট ময়েশ্চারাইজার ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বেজড ময়েশ্চারাইজার ভালো।
আমাদের দেশে বেশির ভাগ ছেলেই সানস্ক্রিন ব্যবহারে বেশ উদাসীন। এটি ব্যবহার না করলে কিন্তু ত্বক কোনোভাবেই সুস্থ থাকবে না। এ জন্য সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে সানস্ক্রিন ব্যবহারের দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে।
সম্ভব হলে ঈদের আগে এক বা দুইবার ত্বকে ভাপ নিতে পারলে ভালো হবে। এতে ত্বক আর্দ্র হয়, রোমকূপ খুলে যায়, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের সমস্যা দূর হয়। তবে খুব গরম পানি দিয়ে ভাপ নেওয়া যাবে না।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পছন্দের কোনো ফেস অয়েল দিয়ে মুখ ম্যাসাজ করতে হবে। এতে ত্বকের নিচে রক্তসঞ্চালন বাড়বে। ফলে ত্বক বেশ সতেজ দেখাবে।
এই সবকিছুর পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে আট ঘণ্টা ঘুমানোটাও কিন্তু জরুরি।