ইসলাম ধর্মে একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত হলো নামাজ। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। প্রত্যেক মুসলমানের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ । কিন্তু এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রথমে ছিল না । ৫ ওয়াক্ত নামায ফরয করা হয় মিরাজের রাতে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মিরাজের রাতে যখন আল্লাহর কাছ থেকে ফিরে আসছিলেন তখন আল্লাহ্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শরিয়তের পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার বিধান নিয়ে মুসা (আ.) নিকটবর্তী পথ অতিক্রম করার সময় তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, কোনো বিশেষ আদেশ লাভ করেছেন কি? মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। তখন মুসা (আ.) বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারবে না। আমি সাধারণ মানুষ সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি এবং বনি ঈসরাইলকেও বিশেষভাবে পরীক্ষা করেছি আপনি মহান আল্লাহ্র কাছে আপনার উম্মতের জন্য এই আদেশ আরও সহজ করার জন্য আবেদন করুন। এভাবে কয়েকবার আসা যাওয়া করার পর যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারিত হলো তখন হযরত মুসা (আ.) এর কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি আবারও বললেন আপনার উম্মত এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেরও পাবন্দি করতে পারবে না। আমি মানুষের স্বভাব অনেক দেখেছি ও বনি ঈসরাইলকেও অনেক দেখেছি। আপনি নামাজ আরও কম করার আবেদন জানান। তখন আল্লাহ্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসাকে (আ.) বললেন আল্লাহ্র দরবারে বার বার আসা যাওয়া করেছি,এখন আবার যেতে লজ্জা বোধ হচ্ছে, তাই আর যাবো না বরং পাঁচ ওয়াক্তের ওপর সন্তুষ্ট রইলাম এবং তা বরণ করে নিলাম।প্রথমে অর্ধেক, তারপর পাঁচ ওয়াক্ত পর্যন্ত কমানো হয়। অপর বর্ণনায়, প্রতিবারে পাঁচ, বর্ণনান্তরে দশ করে কমানোর পর সবশেষে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে এসে তা শেষ হয়।
তখন মহান আল্লাহ্ তায়ালার পক্ষ থেকে ঘোষণা হলো-“বান্দাদের প্রাপ্য সওয়াবের দিক দিয়ে আমার নির্ধারিত সংখ্যা পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই পাবে। আমার পক্ষে আমার বাক্য অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে পাঁচ ওয়াক্ত কিন্তু সওয়াবের ক্ষেত্রে পাঁচই পঞ্চাশ বলে পরিগণিত হবে। এটিই হলো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার দিন।