Image default
ইসলাম

স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভাঙবে?

আলহামদুলিল্লাহ।

যে ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হয়েছে এরপর ঘুম থেকে জাগার পর সে বীর্যের কোন আলামত তার কাপড়ে দেখতে পায়নি তার উপর গোসল আবশ্যক হবে না।

ইবনে কুদামা ‘আল-মুগনি’ গ্রন্থে বলেন:

যে ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হওয়াটা সে জেনেছে, কিন্তু (পোশাকে) বীর্য পায়নি তার উপরে গোসল ফরয নয়। ইবনুল মুনযির বলেন: যত জন আলেমের অভিমত আমার মুখস্ত আছে তারা সকলে এই মতের উপর ইজমা করেছেন।

উম্মে সালামা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, উম্মে সুলাইম (রাঃ) বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! কোন মহিলার যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে কি তার উপর গোসল ফরয হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ; যদি পানি (বীর্য) দেখে।[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] এ হাদিস নির্দেশ করছে যে, যদি পানি (বীর্য) না দেখে তাহলে তার উপর গোসল ফরয নয়।[সমাপ্ত]

দুই:

স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না। কারণ স্বপ্নদোষ রোযাদারের অনিচ্ছায় ঘটে থাকে।

ইমাম নববী ‘আল-মাজমু’ গ্রন্থে বলেন:

আলেমগণের ইজমা হচ্ছে- কারো স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙ্গবে না। কারণ সে ব্যক্তি এক্ষেত্রে অপারগ। যেমন- কারো অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন একটি মাছি যদি উড়ে এসে কারো পেটে ঢুকে যায়। এ মাসয়ালার দলিলের ক্ষেত্রে এটাই হচ্ছে- ভিত্তি। পক্ষান্তরে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত: “যে ব্যক্তি বমি করেছে, কিংবা যার স্বপ্নদোষ হয়েছে, কিংবা যে শিঙ্গা লাগিয়েছে তার রোযা ভাঙ্গবে না” হাদিসটি ‘যয়িফ’ (দুর্বল); যা দলিল পেশ করার উপযুক্ত নয়।[সমাপ্ত]

তিনি ‘মুগনি’ গ্রন্থে (৪/৩৬৩) আরও বলেন:

কারো যদি স্বপ্নদোষ হয় তার রোযা ভাঙ্গবে না। কেননা স্বপ্নদোষ তার অনিচ্ছায় ঘটে থাকে। সুতরাং এটি ঐ মাসয়ালার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ – কেউ যদি ঘুমিয়ে থাকে আর তার গলার ভেতরে কোন কিছু ঢুকে যায়।[সমাপ্ত]

শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে যে দিনের বেলায় ঘুমিয়েছে এবং তার স্বপ্নদোষ হয়েছে, বীর্যও বের হয়েছে; সে কি ঐ দিনের রোযার কাযা পালন করবে?

জবাবে তিনি বলেন:

তার উপর কাযা আবশ্যক নয়। কেননা স্বপ্নদোষ তার ইচ্ছাধীন নয়। কিন্তু, তার উপর গোসল ফরয; যদি বীর্য দেখে থাকে।[মাজমুউল ফাতাওয়া (১৫/২৭৬)]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রমযানের দিনের বেলায় যার স্বপ্নদোষ হয়েছে?

জবাবে তিনি বলেন: তার রোযা সহিহ। স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ভাঙ্গবে না। কেননা স্বপ্নদোষ তার এখতিয়ারে নেই। ঘুমন্ত অবস্থায় কলম তুলে রাখা হয়।[সমাপ্ত]

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (১০/২৭৪) এসেছে:

যে ব্যক্তির রোযা অবস্থায় কিংবা হজ্জ বা উমরার ইহরাম অবস্থায় স্বপ্নদোষ হয়েছে তার কোন গুনাহ নেই; তার উপর কাফ্‌ফারা নেই। এটি তার রোযার উপর, হজ্জের উপর বা উমরার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। তার উপর ফরয হল: জানাবাতের গোসল করা; যদি সে বীর্যপাত করে থাকে।

Related posts

বিশ্বজুড়ে প্রচলিত বিচিত্র সব ইফতারি

News Desk

খলিফা হযরত উমর (রাঃ) এবং তাঁর মোমবাতি এর কাহিনী

News Desk

খলিফা আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের: আমৃত্যু নিঃসঙ্গ জীবনী

News Desk

Leave a Comment