আগামীকাল ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজে টিকে থাকার মিশনে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের। পাশাপাশি এমন ম্যাচে নিজেদের উন্নতিও ফুটিয়ে তুলতে মরিয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি টি স্পোর্টস চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানের হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে টাইগাররা। এমন হার মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিলো না। ম্যাচে ভালো অবস্থায় থেকেও ইনিংসে মাঝের ওভারে বেশক’টি উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়া বাংলাদেশের বোলিং বেশ ভালোই হয়েছিলো। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের দুর্বল হবার পরও ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচে প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করেছিলো বাংলাদেশ।
ডেথ ওভারে মুস্তাফিজের বাজে বোলিং বাংলাদেশের হারের কারণ হিসেবেও ধরা হয়। চার ওভারে ৪৮ রান দেন তিনি। ১৭তম ও ২০তম, নিজের শেষ দুই ওভারে ২৯ রান দেন ফিজ। তবে ১৮তম ও ১৯তম ওভারে ফিজের চেয়েও কম রান দেন অন্য দুই পেসার তাসকিন আহমেদ এবং তরুণ হাসান মাহমুদ। শেষদিকে মুস্তাফিজ আশারনুরূপ বোলিং করতে পারলে, ১৫/২০ রান কম হতো পাকিস্তানের। তাতে ৫ উইকেটে ১৬৭ রানের কম সংগ্রহ পেত পাকিস্তান।
কিন্তু তারপরও ব্যাটিংয়ে লিটন দাস-আফিফ হোসেনের কল্যাণে দারুণভাবে ম্যাচে ছিল বাংলাদেশ। ৩৮ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ১৩তম ওভার শেষে ২ উইকেটে ৮৭ রানে নিয়ে যান তারা। এরপর ব্যাটিং ধসে মাত্র ১৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। আর সেখানেই ম্যাচ হার অনেকাংশে নিশ্চিত হয় টাইগারদের। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৪৬ রান করে বাংলাদেশ।
হারের পেছনে মাঝে ওভারে উইকেট পতনকে দায়ী করেছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া নুরুল হাসান সোহান। আগের ম্যাচের ভুলগুলো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে না করতে মরিয়া সোহান। তিনি বলেন, ‘আমরা হতাশ। উইকেট ভালো ছিল এবং বোলাররাও ভালো করেছে। যদিও আমাদের কয়েক জায়গায় উন্নতি করতে হবে। ব্যাটিং করার সময় মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট হারানোয় ম্যাচ হারতে হয়েছে।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরতে প্রস্তুত প্রথম ম্যাচে বিশ্রাম নেয়া নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সাকিবের ফিরে আসাটা উজ্জীবিত করবে বাংলাদেশকে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস ও রেকর্ড মোটেও ভালো নয় বাংলাদেশের। পরিসংখ্যান বলছে, এই ফরম্যাটে ব্লাক-ক্যাপসদের বিপক্ষে ১৫টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে মাত্র তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সাতটি টি-টোয়েন্টির সবকটিতেই হেরেছে টাইগাররা।
এ বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মত টেস্ট ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ। তার আগ পর্যন্ত কিউইদের মাটিতে কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিততে পারেনি টাইগাররা। বছরের শুরুর জয় এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে জয়খড়া কাটাতে অনুপ্রাণিত করবে। সব মিলিয়ে ১৩৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জয় আছে ৪৭টিতে। হার ৮৬টিতে। বাকি তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
এদিকে, নিজেদের প্রথম খেলায় পাকিস্তানের কাছে ৬ উইকেটে হারে নিউজিল্যান্ড। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মাঠে নামবে কিউইরাও।
বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, ইয়াসির আলী, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদি হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, এবাদত হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, নাজমুল হোসেন শান্ত।
নিউজিল্যান্ড দল
কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ফিন অ্যালেন, মার্টিন গাপটিল, মার্ক চাম্পম্যান, ডেন ক্লিভার, মাইকেল ব্রেসওয়েল, ডেভন কনওয়ে, গ্লেন ফিলিপস, জেমস নিশাম, ইশ সোধি, ব্লেয়ার টিকনার, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, এডাম মিলনে।