বিতর্কের পর বিতর্ক। বিশ্বকাপের আম্পায়াররা যেন বাংলাদেশকে নিয়ে বিতর্কের ছেলেখেলায় মেতেছে। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ভেজা মাঠে খেলতে নামিয়ে দেওয়া, কোহলির ফেক ফিল্ডিং আম্পায়ারদের চোখে না পড়ার পর বাংলাদেশ হেরেই গেলো ৫ রানে। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে আরও এক বিতর্ক সঙ্গী হলো আম্পায়ারদের। তাদের দেওয়া বিতর্কিত এক এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তের শিকার বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ইনিংসের তখন ১১তম ওভার চলে। শাদাব খানের ওভারের চতুর্থ বলে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সৌম্য। উইকেটে আসেন টাইগার কাপ্তান সাকিব আল হাসান। প্রথম বলেই শাদাবের গুগলিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব। মিস করলেন, বল লাগলো সাকিবের বুটে। শাদাব খানরা আবেদন করার পর কিছু একটা ভেবেই আঙুল তুলে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টোক।
আম্পায়ারের আঙুল তোলা দেখেই অবাক হয়েছেন সাকিব। রিভিউ নিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গেই। মাঠের আম্পায়ার তাও দেখেছেন খালি চোখে এক পলকের দেখা। বিতর্কের সৃষ্টি থার্ড আম্পায়ারের কাছে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত গেলেই।
আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর অবাক তো হয়েছিলেনই সাকিব, সঙ্গে মাঠের মধ্যে তার শারীরিক অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিলো তিনি নিশ্চিত আউট হননি।
রিভিউয়ের পর টেলিভিশন রিপ্লেতেও দেখা গেছে আউট হননি সাকিব। রিপ্লেতে দেখা যায় বল সাকিবের বুটে ঠিকই লেগেছে তবে তার আগে ছুঁয়ে গেছে সাকিবের ব্যাটের কানা। আল্ট্রা এজের স্পাইকে স্পষ্ট দেখা গেছে ব্যাটে বল লাগার চিত্র। জিম্বাবুয়ের টিভি আম্পায়ার ল্যাংটন রুসেরের কথা ছিল, সেই স্পাইকটা ছিল ব্যাটের মাটি স্পর্শ করার স্পাইক। ইমপ্যাক্টও ছিল ৩ মিটারের বাইরে।
ঠিকভাবে দেখার প্রয়োজনও মনে করেনি রুসেরে। শেষ পর্যন্ত ফিল্ড আম্পায়ারের এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন তিনিও। তবে সামনে থেকে দেখানো টেলিভিশনে রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গেছে, সাকিবের ব্যাট ওইসময় মাটিতে স্পর্শই করেনি। ব্যাট আর ব্যাটের ছায়ার ভেতরেই ছিল বিস্তর ফারাক।
টিভি আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গেছেন মাঠে উপস্থিত বাংলাদেশি সমর্থকরাও। সাকিব তো বিস্ময়ে বিমূড়ই হয়ে পড়েছিলেন। মাঠ ছেড়েই যেন যেতে চাননি সাকিব। ফিরতে গিয়েও আবার উল্টো ঘুরে গেছেন আম্পায়ারদের সঙ্গে আরেকবার কথা বলতে। কিন্তু তারাও কোনোকিছু শুনতে নারাজ। বুঝিয়ে শুনিয়েই সাকিবকে ফেরত পাঠিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের সাইডলাইনেও এই আউট নিয়ে দেখা গেছে বিস্ময়। লিটন দাস, এবাদত হোসেনদেরও দেখা গেছে থার্ড আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে।
সাকিবের বিতর্কিত এমন আউটের পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়েও। ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া ব্যক্তিগত টুইটারে লিখেছেন, ‘সাকিবের ব্যাটটা কোনাভাবেই মাটিতে লাগেনি। ব্যাটের ছায়ার দিকে মনোযোগ দিন। স্পাইক ছিল তখন। বলের ব্যাটে স্পর্শ করা ছাড়া অন্য কিছুই হতে পারে না জিনিসটা। বাংলাদেশ বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হলো।’
Shakib’s bat didn’t touch the ground at all. Just focus on bat’s shadow. There was a spike. It couldn’t have been anything else except the ball hitting the bat. Bangladesh at the receiving end of a poor umpiring decision. #PakvBan #T20WorldCup
— Aakash Chopra (@cricketaakash) November 6, 2022
ভারতীয় ক্রিকেট ধারভাষ্যকার ও ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হারশা ভোগলে টুইটারে লিখেছেন, ‘এটি পাকিস্তানের জন্য একটি ভাগ্যবান উইকেট ছিল।’
ভারতের আরেক ক্রীড়া সাংবাদিক জয় ভট্টাচার্য তার টুইটারে লিখেছেন, ‘টিভি আম্পায়ার ল্যাংটন রুসেরে, তোমাকে এটার জবাবদিহি করতে হবে।’