এশিয়া কাপ ২০২২ এর দ্বিতীয় পর্বের প্রথম খেলায় আফগানিস্তাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) শারজায় শ্রীলঙ্কাকে ১৭৫ রানের লক্ষ্য দেয় আফগানিস্তান। ১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেট হারিয়ে নিদৃষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।
এদিন ১৭৬ রানের লক্ষে ব্যাটিং-এ নেমে শুরু থেকেই আফগান বলারদের উপর চড়াও হন লঙ্কান দুই ওপেনার ওপেনার পাতুম নিসাঙ্কা ও কুশাল মেন্ডিস। ওপেনিং জুটিতেই তারা তুলেন ৬২ রান। ১৯ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৩৬ রানের ঝড় তুলে মেন্ডিস হন নাভিন উল হকের শিকার। এরপর নিশাঙ্কাকে (২৮ বলে ৩৫) উইকেটরক্ষকের দারুণ ক্যাচ বানান আফগান অফস্পিনার মুজিব উর রহমান। উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি চারিথ আসালাঙ্কা। ১৪ বলে মাত্র ৮ রান করা এই ব্যাটারকে বোল্ড করেন নাবি।
ইনিংসের ১২তম ওভারে মোহাম্মদ নাবি চারিথ আসালাঙ্কাকে (১৪ বলে ৮) বোল্ড করলে ৯৪ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারালে বেশ বিপদেই পড়ে যেতো লঙ্কানরা। নাবির ওই ওভারেই শেষ বলে উঠেছিল ক্যাচ। কিন্তু গুনাথিলাকার সেই ক্যাচ ফাইন লেগে ফেলে দেন করিম জানাত। তার পরের ওভারের প্রথম বলে রশিদ খানের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। আম্পায়ারও আবেদনে আঙুল তুলে দেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। গুনাথিলাকা ১৩ আর শানাকা জীবন পান ব্যক্তিগত ১ রানে। যদিও শানাকা সেই জীবন কাজে লাগাতে পারেননি। মুজিবের দ্বিতীয় শিকার হন ৯ বলে ১০ করেই।
১৬তম ওভারে নাভিন উল হকের ওপর চড়াও হন ভানুকা রাজাপাকসে। প্রথম তিন বলে দুটি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। ওভারের শেষ বলেই আউট হতে পারতেন রাজাপাকসে। এবার ডিপকভারে ড্রপ হয় সহজ ক্যাচ। পরের ওভারে রশিদ খান বোল্ড করেন ভয়ংকর গুনাথিলাকাকে। ২০ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৩ রান আসে গুনাথিলকার ব্যাট থেকে। ১৫১ রানে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। শেষদিকে রাজাপাকসে আর গুনাতিলাকার দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫ বল বাকি থেকেই জয় তুলে নেয় শানাকার দল। রাজাপাকসে (১৪ বলে ৩১) অবশ্য শেষ সময়ে এসে বোল্ড হন নাভিনের বলে। তবে তখন ৯ বলে মাত্র ২ রান দরকার লঙ্কানদের। হাসারাঙ্গা ৯ বলে ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।
আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে ৪ ওভারে ৩০ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন এই অফস্পিনার।
এর আগে টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিং-এ পাঠায় শ্রীলঙ্কা। শুরুতে দুই ওপেনারের ব্যাটে পাওয়ার-প্লে তে দারুণ শুরু পায় আফগানরা। এর মাঝে অবশ্য তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মাত্র ৪ রানের মাথায় জীবন পান রহমানউল্লাহ গুরবাজ। আম্পায়ারের সফট সিগনাল আউট পেয়ে মাঠ ছাড়ছিলেন গুরবাজ তবে বাউন্ডারি লাইন ক্রস না করে আবেদন জানান পুনরায় দেখার। রিভিউতে দেখা যায় ক্যাচ নেয়ার পর গুনাথিলাকার পা লেগে যায় বাউন্ডারি লাইনে।
জীবন পেয়ে গুরবাজ রীতিমত ঝড় তুলেন লঙ্কান বোলারদের ওপর। মাত্র ২২ বলে পূর্ণ করেন দেশের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি। এর আগে ২০১৬ সালে আরব আমিরাতের বিপক্ষে নাজিবুল্লাহ জাদরান ফিফটি হাঁকান ২২ বলে।ফিফটি হাঁকিয়ে গুরবাজ ছুটেন শতকের পথে। ইবরাহিম জাদরানকে নিয়ে বাঁধেন ৯৩ (৬৪) রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত জুটি ভাঙে ৪৫ বলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৪ রান করা গুরবাজের বিদায়ে। আসিথা ফার্নান্দোর বলে গুরবাজ ক্যাচ দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার হাতে। ইবরাহিম জাদরানকে ৪০ রানে ফেরান হাসারাঙ্গা। দলীয় ১৫১ রানের মাথায় জাদরানের বিদায়ের পর ১ রানে ফেরেন মোহাম্মদ নবী। এরপর ১৭ রানে নাজিবুল্লাহ জাদরান ফেরেন রান আউট হয়ে। তবে শেষ দিকে রশিদ খানের ৯ রানে ৬ উইকেটে ১৭৫ রান তুলেছে আফগানিস্তান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ২ উইকেট নেন দিলশান মাধুশাঙ্কা। ১ উইকেট করে নেন মাহেশ থেকশানা, আসিথা ফার্নাদো।