এত দিনে তার স্বপ্নপূরণ হলো। মার্কিন মুল্লুক থেকে দেশের মাটিতে কঠোর পরিশ্রম করে আসছিলেন এক সময়ের তারকা ফুটবলার আবুল হোসেনের ছেলে আবিদ হোসেন। শেষ পর্যন্ত তার পথচলার শুরু হলো। গতকাল (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রিমিয়ার ফুটবলে মোহামেডানের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছে আবিদের। সেরা একাদশে খেলেছেন আবিদ। বাবা খেলতেন রাইট ব্যাক পজিশনে, ছেলে খেলছেন লেফটব্যাক পজিশনে।
গতকাল টঙ্গীতে প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান প্রথম খেলায় শেখ রাসেলের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে। মোহামেডান ফুটবল দলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব বললেন, ‘আমাদের দলের গোলটির পেছনে আবিদের অবদান আছে।’ নকিব বললেন, ‘মোহামেডানের একাদশে খেলার মতো হয়েছে বলেই তাকে নামানো হয়েছে।’ প্রথম মিনিট থেকে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত খেলেছেন আবিদ। এর পর তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়। নকিব বললেন, ‘আবিদ খেলতে পারছিল না। টান লেগেছিল বলে বসিয়ে দিতে হয়।’
আবুল বাংলাদেশের ফুটবলে একটি উজ্জল নক্ষত্রের নাম। দীর্ঘদেহী এই ফুটবলার লম্বা থ্রোয়ের মাস্টার ছিলেন। ফুটবলের স্বপ্ন যুগের খেলোয়াড় ছিলেন আবুল। মোহামেডান থ্রো পেলে গ্যালারির দর্শক সেটিকে কর্নার মনে করতেন। লম্বা থ্রোয়ের প্রথম স্রষ্টা আবুল নিখাঁদ একজন ভদ্রলোক ছিলেন। ফুটবল মাঠে লড়াকু কিন্তু কথা বলতে গেলে এ যেন এক অচেনা মানুষ। নিভৃতচারী, প্রচার খুঁজেননি কখনো, কষ্ট পেলেও কাউকে বলতে চান না। স্ত্রীসহ অনেক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন ফ্যামেলি ভিসায়। মধ্যে একবার ছেলে আবিদকে দেশে পাঠিয়েছিলেন, বাবার ক্লাবে এসেছিলেন। এখানে সবাই বাবার শুভাকাঙ্ক্ষী। সবাই বাবার মতো করে মাথায় হাত রাখবেন। কিন্তু মোহামেডানের একজন কর্তার দাম্ভিক আচরণে ছেলের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার, আবিদ ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে। আবার ঢাকায় পাঠানো হয়। এবার নকিবদের হাতে পড়েন আবুলের ছেলে আবিদ। ঠাঁই হয় মোহামেডানের ঘরে। বাবার মান যেন থাকে সেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে আবিদ কঠোর অনুশীলন করলেন। জায়গা পেলেন একাদশে। নকিব বললেন, ‘আবিদ খুব ভদ্র ছেলে এবং খুব সিরিয়াস। আমরা তাকে নিয়ে আশাবাদী।’