বিশ্বকাপে এক ম্যাচে এত হলুদ কার্ড আগে কখনো দেখা যায়নি। আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে ছিল হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি। স্প্যানিশ রেফারি আন্তনিও মাতেও লাহজ গোটা ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন ১৮টি। ৯২ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক ম্যাচে এত হলুদ কার্ড আর কোনো রেফারি পকেট থেকে বের করেননি। সমান ৮টি করে হলুদ কার্ড দেখেছেন আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়েরা। স্প্যানিশ রেফারি শুধু যে খেলোয়াড়দেরই কার্ড দেখিয়েছেন তা নয়, তার থেকে রেহাই পাননি আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি ও সহকারী ওয়াল্টার স্যামুয়েলও।
এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৬টি কার্ড দেখানোর রেকর্ড হয়েছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে। পর্তুগাল-নেদারল্যান্ডসের সেই ম্যাচে রেফারি ১৬টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন। এতদিন এটাই ছিল বিশ্বকাপের কোনো এক ম্যাচে সর্বোচ্চ কার্ড দেখানোর রেকর্ড। সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন আন্তনিও মাতেও লাহোজ।
হলুদ কার্ডই যদি একটা ম্যাচে ১৮ বার বের করতে হয় তাহলে সেই ম্যাচে ফাউল হয়েছে কতবার? ৪৮ বার ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি। এতবার ফাউল এবং হলুদ কার্ডের জেরে বারবার খেলার গতি কমে গিয়েছে। আর এতে দুই দলই অসন্তুষ্ট। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি এবং গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ম্যাচ শেষে রেফারিকে শূলে চড়িয়েছেন।
ম্যাচ শেষে মেসিকে খুব একটা প্রতিক্রিয়া দেখাতে যায়নি। কিন্তু নেদারল্যান্ডস ম্যাচের পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না আর্জেন্টাইন জাদুকর। মেসি রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছেন, ‘রেফারিকে নিয়ে কথা বলতে চাই না। ম্যাচে কী হয়েছে সেটা সবাই দেখেছে।’ এরপরই স্প্যানিশ রেফারির বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ এনেছেন মেসি। তিনি বলেছেন, ‘ফিফার পুনর্বিবেচনা করা উচিত। সে নিজের কাজই ভালোভাবে জানেন না, গুরুত্বপূর্ণ এমন ম্যাচে তাকে দায়িত্ব দেয়া উচিত হয়নি। রেফারির কারণেই অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়িয়েছে। সে সবসময় আমাদের বিপক্ষে ছিল। শুধু তাই নয়, যে গোলটি দিয়ে ওরা সমতায় ফিরেছে সেটাও ফাউল ছিল না।’
টাইব্রেকারে ডাচদের ২টি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া মার্তিনেজও রেফারির সমালোচনায় মুখর ছিলেন। তিনিও মেসির মতোই একসুরে কথা বলেছেন, ‘ডিবক্সের সামনে রেফারি কয়েক বার ফাউল দিয়েছেন। নেদারল্যান্ড যেন গোল করে সে সেটাই চেয়েছিল। আশা করছি, এরকম রেফারি সামনে পাব না। সে একটা অপদার্থ।’ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে স্প্যানিশ রেফারি কেন এমন করেছেন তার কারণও খুঁজে পেয়েছেন মার্তিনেজ। তিনি জানিয়েছেন, ‘স্পেন এরইমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। তিনি তাই খুব করে আমাদেরও বিদায় চেয়েছিলেন।’
সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনার ৮ জন ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখেছেন। এরমধ্যে খোদ লিওনেল মেসিও রয়েছেন। এছাড়া লাউতারো মার্তিনেজ, অ্যাকুনা, ওতামেন্দি, ক্রিস্টিয়ানো রোমেরোরাও হলুদ কার্ড দেখেছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে নামার আগে সবাই চাপে থাকবেন। দুশ্চিন্তা বেশি মেসিকে নিয়ে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তিনি যদি হলুদ কার্ড দেখেন তাহলে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠলেও মেসির খেলা হবে না!