নামটির সঙ্গে আর্সেনালের ‘প্রেম’ আজকের নয়।
এই ভিয়েরা উপনামের একজন আর্সেনালের সোনালি অতীতের অন্যতম পুরোধা ছিলেন। ছিলেন ‘ইনভিন্সিবলস’ দলের অধিনায়ক, ওয়েঙ্গার-মন্ত্র অন্যান্য সতীর্থদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। বলা হচ্ছিল প্যাট্রিক ভিয়েরার কথা, ফরাসি মিডফিল্ডার এসি মিলান থেকে নব্বইয়ের দশকে আর্সেনালে এসেই জয় করে নিয়েছিলেন উত্তর লন্ডনের লাল অংশের মন। সেই ভিয়েরা নামে আরেকজন যখন আর্সেনালে আসেন, দলটার ভক্তরা স্মৃতিকাতর না হয়ে কোথায় যাবেন?
সময় বইছে নিরন্তর, লন্ডনের টেমস নদীতে পানিও গড়িয়েছে বহুদূর। খেলোয়াড়ি জীবনের পাট চুকিয়েছেন আগেই, প্যাট্রিক ভিয়েরা এখন প্রিমিয়ার লিগেরই আরেক লন্ডনি ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেসের কোচ।
এমন অবস্থাতেই আর্সেনালে আগমন ঘটল আরেক ‘ভিয়েরা’-র। এই ভিয়েরা অবশ্য ফ্রান্সের নন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে তাঁর বাড়ি। মূল নামের মতো খেলার ধরন বিচারেও দুই ভিয়েরার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। প্যাট্রিক যেখানে রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার ছিলেন, আক্রমণভাগে সাহায্য করার চেয়ে যার রক্ষণে সাহায্য করার ব্যাপারেই মন ছিল বেশি, ফাবিও তেমন নন। বেশ সৃষ্টিশীল এই ফুটবলার গোল বানিয়ে দিতে, খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজের পায়ে রাখতেই পছন্দ করেন বেশি। এই ফাবিও ভিয়েরাকে দিয়েই আর্সেনালের কোচ মিকেল আরতেতা প্রিমিয়ার লিগকে শেখাতে চাইছেন সৃষ্টিশীলতার নতুন পাঠ।
সাড়ে তিন কোটি ইউরোর বিনিময়ে পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তো থেকে আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন ফাবিও ভিয়েরা। বিভিন্ন শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সামনের কয়েক বছরে ভিয়েরা বাবদ আরও ৫০ লাখ ইউরো আয়ের সুযোগ থাকছে পোর্তোর সামনে।
পাঁচ বছরের চুক্তিতে আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন এই ভিয়েরা। আনন্দিত আরতেতার কথাতেও ফুটে উঠেছে ভিয়েরার সৃষ্টিশীলতার ব্যাপারটাই, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত ফাবিও ভিয়েরার মতো একজজন প্রতিভাকে খুঁজে বের করতে পেরে। ও অনেক সৃষ্টিশীল একজন খেলোয়াড় যে আমাদের আক্রমণভাগের খেলার ধরনের মান বাড়াবে অনেক।’
গত মৌসুমে পোর্তোর হয়ে ৬ গোল করার পাশাপাশি মাঝমাঠ থেকে ১৪ গোলে সহায়তা করেছেন ভিয়েরা, ইউরোপের শীর্ষ ছয় লিগে খেলা ২১ বছরের কম বয়সী খেলোয়াড়দের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
ভিয়েরা নিজেও যে আর্সেনালে আসার জন্য মুখিয়ে ছিলেন, সেটা বোঝা গেছে তাঁর কথাতেই, ‘আমি যখন শুনলাম উত্তর লন্ডনের এক ক্লাব আমাকে দলে টানার ব্যাপারে আগ্রহী, আমি প্রার্থনা করা শুরু করেছিলাম ক্লাবটা যেন আর্সেনাল হয়!’ কথাটা উত্তর লন্ডনের আরেক ক্লাব টটেনহামের হয়তো অতটা পছন্দ হবে না!