পুলিশি হেফাজতে মাহশা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে এক মাস ধরে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের থামাতে সরকারের ‘দমনচেষ্টা’র সমালোচনা করে গত মাসে ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দিয়েছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার আলী দাইয়ি। আজ স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দাইয়ির পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, দাইয়ির পাসপোর্ট জব্দের খবরে তেহরানের সংস্কারবাদী পত্রিকা হামিহান লিখেছে, ‘মাহশা আমিনির মৃত্যুতে লেখা ইনস্টাগ্রাম পোস্টের কারণে আলী দাইয়ির পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিক পুলিশের হাতে আটক হন ২২ বছর বয়সী কুর্দিশ তরুণী আমিনি। ‘যথাযথ নিয়ম মেনে’ হিজাব না পরার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। এর তিন দিন পর তাঁর মৃত্যুর খবর জানায় পুলিশ। এরপর পুলিশের অত্যাচারে মাসার মৃত্যু হয়, এমন অভিযোগ অনেকের। এ ঘটনায় ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কঠোর ভূমিকায় থামানোর চেষ্টা করে সরকার। ২৭ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দেন আলি দাইয়ি। ইরান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘ইরানের জনগণের ওপর দমন, নির্যাতন ও গ্রেপ্তার চালানোর বদলে তাঁদের সমস্যার সমাধান করুন।’
১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রাখা দাইয়ি ইরানের হয়ে সর্বশেষ খেলেন ২০০৬ বিশ্বকাপে। ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে ১৪৯ ম্যাচে ১০৯ গোল করেন তিনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তাঁকে টপকে যাওয়ার আগপর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ড ছিল দাইয়ির। ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে খেলা প্রথম ইরানি ফুটবলারও ছিলেন দাইয়িই। জার্মান বুন্দেসলিগায় আর্মিনিয়া বেইলেফেল্ড, বায়ার্ন মিউনিখ এবং হার্থা বার্লিনের হয়ে খেলেছিলেন তিনি।
দাইয়ির সাবেক ক্লাব হার্থা রোববার এক টুইটে জানায়, নারী অধিকারের পক্ষে থাকায় দাইয়িকে দেশ ছাড়তে দেওয়া হচ্ছে না। এর এক দিন পরই তাঁর পাসপোর্ট জব্দের খবর প্রকাশ্যে এল।
বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানানোয় সরকারের রোষানলে পড়েছেন বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক মিডফিল্ডার আলী করিমিও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন করিমি।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক ফুটবলার হোসেইন মাহিনিকে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গায় প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। গত সপ্তাহে অবশ্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন মাহিনি।