দীর্ঘদিন ধরে ফর্মহীনতায় ভুগেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তার জন্য কম সমালোচনা সহ্য করতে হয়নি তাকে। অবশেষে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন কোহলি। চলমান এশিয়া কাপে শুরু থেকেই ব্যাটে রান পাচ্ছেন। গতকাল সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারলেও কোহলি খেলেছেন ৪৪ বলে ৬০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না অনেকদিন ধরে। ফর্মহীনতা আর অবসাদগ্রস্থতা মিলিয়ে নিয়েছিলেন ক্রিকেট থেকে বিরতিও। টানা এক মাস ব্যাটও ছুঁয়ে দেখননি হাত দিয়ে। এশিয়া কাপ দিয়েই ফিরেছেন ক্রিকেটে। আর ফিরেই যেন ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন প্রতি ম্যাচেই। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ৩৪ বলে ৩৫। দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংয়ের বিরুদ্ধে খেলেন ৪৪ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। আর গতকাল সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৬০ রান করে ভারতের রানের চাকা টেনে নিয়ে গেছেন তিনি।
এই কোহলিকেই কিছুদিন আগে দল থেকে বাদ দেয়ার জন্য সরব হয়েছিলেন অনেকে। সমালোচকদের তালিকায় ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের সাবেকরাও। দলের অটো চয়েস বলে তার কড়া সমালোচনা করেছেন অনেকে। আসন্ন বিশ্বকাপেও তার পরিবর্তে অন্যদের সুযোগ দেয়ার কথা বলেছিলেন সাবেকরা। সেই দুঃসময়ে একমাত্র সাবেক অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনিকে পাশে পেয়েছিলেন কোহলি।
গতকাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও এসেছিলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক, সেখানেই নিজের সমালোচকদের এক হাত নিলেন কোহলি। সাথে আরও জানিয়ে দিলেন দুঃসময়ে তার পাশে থাকা একমাত্র মানুষটি ছিলেন ধোনি।
সংবাদ সম্মেলনে কোহলি বলেন, ‘আপনাদের একটা কথা বলি। যখন টেস্টের অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলাম, আমি মাত্র একজনের কাছ থেকেই একটা মেসেজ পেয়েছিলাম। যার সঙ্গে আগে আমি খেলেছি। তিনি হলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনেকের কাছেই আমার নাম্বার রয়েছে, অনেকেই অনেক রকম পরামর্শ দেয়, অনেকে টিভিতে আমার খেলা নিয়ে কথা বলে, তবে যাদের কাছে আমার নাম্বার রয়েছে, তাদের মধ্যে একমাত্র ধোনি ছাড়া আর কারো কাছ থেকে কোনো মেসেজ পাইনি।’
শুধু টেলিভিশনের পর্দায় বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই তার সমালোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কোহলি বলেন, ‘তার সমালোচনা করা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে বা টেলিভিশনের পর্দায়। তাকে যারা পরামর্শ দিয়েছেন, তারাও সেসময় একই কাজ করেছেন। কিন্তু কেউ তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে পাশে দাঁড়াননি।’
সাবেক অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমি আসলে বলতে চাচ্ছি যে, কারো খেলা নিয়ে যদি আমার কিছু বলার থাকে, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারি। যদি সারা বিশ্বের সামনে আপনি তাকে পরামর্শ দেন, তবে আমার কাছে সেটা বিশেষ কোনো গুরুত্ব পায় না। যদি আমাকে কিছু বলার থাকে, তাহলে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলা উচিত। তাতেই বোঝা যায় যে, আপনি সত্যিই আমার ভালো চাইছেন।’
উল্লেখ্য, কোহলি যখন রান পাচ্ছিলেন না, তখন সাবেকদের অনেকেই সংবাদমাধ্যমে তার কট্ট্র সমালোচনা করেছিলেন। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব বলেছিলেন, ‘এমন নয় যে গত পাঁচ-ছয় বছরে কোহলিকে ছাড়া কোনও দিন ভারত খেলেনি। তবে ওর মতো ক্রিকেটারকে আমি ছন্দে দেখতে চাই। ওকে হয়তো বাদ বা বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। তবে এখনও ওর মধ্যে অনেক ক্রিকেট বাকি রয়েছে। আমি চাই ও রঞ্জি খেলে ছন্দে ফিরে আসুক।’
কোহলির সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী তাকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। সাবেক পেসার ইরফান পাঠান নাম না উল্লেখ করেই বলেছিলেন, বিশ্রাম নিয়ে কেউ কখনও রানে ফিরতে পারেননি।