বনানীর একটি অভিজাত হোটেলে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের লোগো উন্মোচন এবং ক্যাপ্টেন্স মিট অনুষ্ঠান। ১২ দল নিয়ে লিগ শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। এখনো ভেন্যু চূড়ান্ত না হলেও গতকাল (৩০ জানুয়ারি) লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্পনসর হিসেবে ঘোষণা করা হলো মোটরসাইকেল বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান টিভিএসের নাম।
১২ দলের অধিনায়ক, সঙ্গে কয়েকটি দলের কোচও এসেছিলেন অনুষ্ঠানে। হাজির ছিলেন নতুন নিয়োগ পাওয়া জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। একবার এই টেবিল তো, আরেকবার সেই টেবিলে বসেছিলেন। এমন না যে তার জন্য নির্ধারিত চেয়ার ছিল না। কোচ হ্যাভিয়ের বিভিন্ন দলের কোচদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছিলেন। কথা বলছিলেন তাদের দলের খেলোয়াড়দের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। খেলোয়াড়দের সঙ্গেও কথা হয়েছে। একসময় সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা হয় এই কোচের। অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্লেটে হালকা খাবার তুলে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের টেবিলে বসলেন কোচ।
এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভাঙা হাটের মতোই পরিস্থিতি। কোচের সঙ্গে কথা হয়, কী ভাবছেন তার দল নিয়ে। সামনে জাতীয় দল গঠন নিয়ে। কথায় এটুকু পরিষ্কার, এই দেশটা ফুটবল জাতি, ক্রিকেট জাতি। টিভির পর্দায় ক্রিকেটের ব্যাট-বলের লড়াই অহরহ চোখে পড়েছে। তার সঙ্গে কথায় মনে হলো ফুটবলের রমরমা উত্তজেনা চর্মচোখে দেখার সুযোগ হয়নি। তাই হয়তো ক্রিকেটের কথাটা তার মুখে শোনা গেলো। সব বাদ দিয়ে বাংলার ফুটবল দর্শকদের একটা ট্রফি উপহার দেওয়ার কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, আগে বাফুফেতে ছিলেন শেখ মো. আসলাম, তারপরও জাতীয় দলে ভালো মানের স্ট্রাইকার নেই। কথাটা শুনে পাল্টা প্রশ্ন করে কোচ বললেন, ‘তুমি কি মনে করো জাতীয় দলে ভালো স্ট্রাইকার নেই? এক সাংবাদিক বললেন, ‘আছে, কিন্তু তারা মনের বিচারে পিছিয়ে।’
স্প্যানিশ কোচ ১৫ জানুয়ারি ঢাকায় এসেছেন। এরই মধ্যে বুঝে গেছেন কিংবা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে। কোন প্রশ্নের জবাব কেমন হবে। তার সঙ্গে কথায় মনে হয়েছে এখানকার ফুটবল অঙ্গনের সবকিছুই তার জানা, কিন্তু প্রকাশভঙ্গিটা যেন পরিকল্পিত হয়।
ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল ,জাতীয় দলে ঢুকতে হলে কোনো একজনের সঙ্গে সুম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বুঝিয়ে দিলেন, জাতীয় দলে খেলতে হলে যোগ্যতা দিয়ে খেলতে হবে। কারো কথায় দল চূড়ান্ত করবেন না। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বললেন, ‘লিগ শুরু হলে খেলা দেখবো। খেলোয়াড় বাছাই করবো।’
বাংলাদেশের এই কোচ পেশাদার ফুটবলার ছিলেন না, ফুটসাল খেলেছেন। পাল্টা জানতে চাইলেন, আপনারা কি ফুটসাল চেনেন? তখন সহকর্মী বললেন, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা জানি।’ কোচ বললেন, ‘ফুটসাল এবং ফুটবল দুটোই খেলেছি।’ এই স্প্যানিয়ার্ডকে জিজ্ঞাসা করার পরও বললেন না তার চোখে কে সেরা খেলোয়াড়- নেইমার, নাকি মেসি? তবে শ্রদ্ধা জানালেন পতুর্গিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। তিনি হয়তো বিশ্বকাপের ছোঁয়া পাবেন না। নেইমার, রোনালদো মেসি নয়, এখন ভাবনা বাংলাদেশের ফুটবলে একটা ট্রফি এনে দেওয়া। তাহলে নিজের ক্যারিয়ারেও যে সাফল্যের পালক লাগবে।