ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আসর বসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো কাতারেও মানা হয় ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। সেটি নিয়েই এবার বিপাকে পড়তে চলেছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেইন।
কাতার মুসলিম দেশ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার আইনে সমকামিতা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তারা আগে এই বিষয়ে সরাসরি নিষেধ না করলেও নিজেদের দেশের আইন অনুযায়ীই সমকামিতাকে প্রশ্রয় দিবে না কাতার। আয়োজকদের সঙ্গে একমত হয়ে ফিফাও জানিয়েছে, এবারের বিশ্বকাপে সমকামিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় এমন কিছু করা যাবে। কেউ যদি তেমন কিছু করে থাকে তবে তার জন্য রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থা।
এদিকে ফিফার এমন নিয়মের পরই আলোচনায় উঠে এসেছে আজকের দ্বিতীয় দিনের ম্যাচে খেলতে নামা ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইনের কথা। মুসলিম দেশগুলোতে সমকামিতা নিষিদ্ধ হলেও ইউরোপের অনেক দেশেই ত্যা বৈধ। এমনকি তারা সমকামীদের অধিকার নিয়েও বেশ সচেতন। সমকামীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়ক সবসময়ই এক বিশেষ আর্মব্যান্ড পরেন হাতে। সেই আর্মব্যান্ডে থাকে একটি হার্ট চিহ্ন। আর সেই হার্ট চিহ্নের ভেতরে রাঙানো রংধনুর সাত রঙে, যেটিকে ধরা হয় সমকামীদের প্রতীক হিসেবে। এটাকে নাম দেয়া হয়েছে ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’।
কাতারের আইনের সঙ্গে সাম্ঞ্জস্য রেখে এবার ফিফাও জানিয়েছে, কাতার বিশ্বকাপে কোনো খেলোয়াড় ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ পরে খেলতে নামতে পারবে না। যদি কেউ নামে তাহলে খেলার আগেই তিনি হলুদ কার্ড পাবেন।
এদিকে শুধু ইংলায়ন্ডই নয়,নেদারল্যান্ড বা জার্মানির মতো দেশগুলোতেও সমকামিতা বৈধ। তাই তাদের অধিনায়করাও সমকামীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ ব্যবহার করে আসছে।
ফিফার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইংলিশ অধিনায়ক কেইন, ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক এবং জার্মান অধিনায়ক ম্যানুয়েল ন্যুয়ার বিশেষ এই আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। যদি তারা নিজেদের সিদ্ধান্তই ধরে রাখে তাহলে খেলার আগেই হলুদ কার্ড দেখবে তারা।
এদিকে, ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) অধিনায়ক কেইনকে ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ পরে মাঠে নামতে নিষেধ করেছে।
নিজের দেশের ফুটবল কর্তাদের নিষেধের পরও কেইন ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ পরে মাঠে নামেন কিনা সেটি দেখা যাবে আজই।
এদিকে নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক ভ্যান ডাইক তো সরাসরি ঘোষণা দিয়েই বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই আগামীকাল ৯য়াজ সেনেগালের বিপক্ষে) ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামব। আমরা আমাদের পয়েন্ট অব ভিউতে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনব না। আমি যদি হলুদ কার্ডও দেখি, তবুও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করব না। তবে এটা নিয়ে (হলুদ কার্ড) আমি অবশ্যই কথা বলব। কারণ, এটিকে কাঁধে নিয়ে তো কেউই খেলতে পছন্দ করবে না।’