দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের আলাদা একটা ধরন বা ছন্দ আছে। এর মধ্যে ব্রাজিলের ফুটবলটা যেন আরও আলাদা। এর কারণেই হয়তো ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলে কখনোই ইউরোপের কোনো কোচ দেখা যায়নি।
শুধু জাতীয় দলই নয়, ব্রাজিলের পুরো ফুটবল অঙ্গনেই কখনো কোনো ইউরোপিয়ান কোচ কোচিং করাননি। এবার এই ধারাটা বদলে যাক, এটাই চাইছেন দেশটির কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিও।
ব্রাজিলের ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য রোনালদোর চাওয়া, অদূর ভবিষ্যতে নেইমারদের কোচ হয়ে আসুন পেপ গার্দিওলা বা কার্লো আনচেলত্তি।
২০১৬ সালে দুঙ্গার জায়গায় ব্রাজিলের কোচ হয়ে আসেন তিতে। ৬ বছরের অধ্যায়ে ব্রাজিল দলের হয়ে এখন পর্যন্ত তাঁর সাফল্য বলতে ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা জয়। তবে তিতের ব্রাজিল এবার কাতার বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে।
তা কাতার বিশ্বকাপ খেলতে ব্রাজিল ফেবারিট হিসেবে যাক বা না যাক, সেটা রোনালদোর কাছে কোনো বিষয় নয়। তিনি চান ব্রাজিলের ফুটবলের অচলায়তনটা ভাঙুক, দলটিতে ইউরোপিয়ান কোনো কোচ আসুক। আর অচলায়তন ভেঙে ব্রাজিল জাতীয় দলে ইউরোপিয়ান কোচ যদি আসেনই, এই মুহূর্তে গার্দিওলা বা আনচেলত্তির চেয়ে ভালো আর কেই-বা হতে পারেন!
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানকে রোনালদো বলেছেন, ‘(গার্দিওলা বা আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দেখলে) আমার ভালোই লাগবে। শুধু ব্রাজিল জাতীয় দলেই নয়, ইউরোপিয়ান কোনো কোচ ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ইন্ডাস্ট্রিতেই নেই। পেপ বা আনচেলত্তি ব্রাজিলের কোচ হিসেবে এলে ইতিহাসই তৈরি হবে। এটা আমাদের ১০০ বছরের ইতিহাস বদলে দেবে।’
বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ হয়ে গার্দিওলা এখন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ। দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও তিনটি লা লিগাসহ বার্সেলোনা ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি শিরোপা জেতানো গার্দিওলা সাফল্য পেয়েছেন বায়ার্ন ও ম্যান সিটিতেও। বায়ার্নকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাতে না পারলেও ৩টি বুন্দেসলিগাসহ এনে দিয়েছেন ৭টি শিরোপা। আর সিটির হয়ে এখন পর্যন্ত জিতেছেন ১১টি শিরোপা। ম্যান সিটির সঙ্গে তাঁর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুনে।
অন্যদিকে বায়ার্ন, এসি মিলান ও জুভেন্টাসের সাবেক কোচ আনচেলত্তি রিয়াল মাদ্রিদের দ্বিতীয় মেয়াদে কোচ হিসেবে যোগ দেন গত বছর। রিয়ালে দ্বিতীয় মেয়াদে একটি করে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগাসহ চারটি শিরোপা জেতানো ইতালিয়ান এ কোচের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ আছে আগামী মৌসুমের শেষ পর্যন্ত।
এ মৌসুম শেষে গার্দিওলা আর আগামী মৌসুম শেষে আনচেলত্তি কী করবেন, তা বলা মুশকিল। দেখা যাক, রোনালদোর ইচ্ছা পূরণ করতে তাঁদের দুজনের কেউ ব্রাজিলের কোচ হতে চান কি না অথবা ব্রাজিলের ফুটবল কর্তৃপক্ষই বা তাদের প্রথা ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ার সাহস দেখায় কি না!