অতিরিক্ত সময়ে গড়ালো ক্রোয়েশিয়া ও ব্রাজিলের মধ্যকার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল রায়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দু’দল। ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের লক্ষ্যে খেলতে থেকে দু’দল। তবে গোলের দেখা পায়নি কেউ। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া। বিরতি থেকে ফিরে একাধিক আক্রমণ করে ব্রাজিল। তবে গোলের দেখা পেতে ব্যর্থ হয় তারা। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়াও গোল করতে ব্যর্থ হলে গোলশূন্য থেকে শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিট। ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে দু’দল। ম্যাচের ১০ মিনিটে সাজানো আক্রমণে ওঠে ব্রাজিল। বাম প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকার চেষ্টা করে রাফিনহা। তবে সেখান থেকে ক্রস করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের ১২ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস করেন মারিও প্যাসালিচ তবে তাতে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ওসিপ জুরানোভিচ। এরপর ম্যাচের ১৪ মিনিটে কর্নার পায় ক্রোয়েশিয়া। তবে সেখান থেকে সুবিধা করতে পারেনি তারা।
এরপর খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে এনে নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে ব্রাজিল। ম্যাচের ২০ মিনিটে বাম দিক থেকে আক্রমণে ওঠে ব্রাজিল। ডি বক্সের ভেতরে নেইমারের সঙ্গে ওয়ান টু করে বল পেয়ে শট করলেও তা আটকে দেন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডাররা। এরপর পাওয়া বলে নেইমার শট করলেও তা আটকে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ক্যাসেমিরো। তবে তা ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে কর্নার হয়। কর্নার থেকেও সুবিধা করতে পারেনি ব্রাজিল। ম্যাচের ২৫ মিনিটে ওসিপ জুরানোভিচকে ফাউল করার কারণে হলুদ কার্ড দেখেন দানিলো। ডান প্রান্ত থেকে ফ্রি কিক পায় ক্রোয়েশিয়া। সেখান থেকে মড্রিচের নেওয়া ফ্রি কিক ক্লিয়ার করে দেন থিয়াগো সিলভা।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। তবে তা থেকে কোন সুবিধা করতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৩০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ইভান পেরিসিচ। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। এরপর ম্যাচের ৩১ মিনিটে নেইমারকে ফাউল করার কারণে মার্সেলো ব্রোজোভিচকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ব্রাজিল আক্রমণে গেলেও তা থেকে গোল পেতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপর ম্যাচের ৩৭ মিনিটে আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে তা ক্লিয়ার করে দেয় ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ৪১ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইর থেকে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। সেখান থেকে নেইমারের নেওয়া ফ্রি কিক সহজেই নিজের গ্লাভসে নেন ডমিনিক লিভাকোভিচ।
এরপর গোলের লক্ষ্যে বেশ কিছু আক্রমণ করে দু’দল। তবে শেষ পর্যন্ত গোল না হওয়ায় গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া।
বিরতি থেকে ফিরেই প্রথম আক্রমণে যায় ব্রাজিল। ম্যাচের ৪৭ বাম প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ক্রস করেন রাফিনহা। ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল পোস্টে গেলেও তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। এরপর ম্যাচের ৪৮ মিনিটে নেইমারের নেওয়া শট আটকে দেয় ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ৫০ মিনিটে কর্নার পায় ক্রোয়েশিয়া। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে বাম দিক থেকে ক্রস বাড়ান ইভান পেরিসিচ। তবে তা চলে পোস্টের বাইর দিয়ে। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে রিচার্লিসনের বাড়ানো বলে শট করেন নেইমার। তবে এবারও অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে রাফিনহার পরিবর্তে অ্যান্টোনিকে মাঠে নামান সেলেসাও কোচ তিতে।
ম্যাচের ৬২ মিনিটে গোছানো আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। সেখান থেকে নেইমারের নেওয়া শট মানব দেওয়ালে লেগে প্রতিহিত হয়। এরপর ম্যাচের ম্যাচের ৬৬ মিনিটে পাকুতার নেওয়া শট আবারও অসাধারণ সেভ দেন ডমিনিক লিভাকোভিচ।
ম্যাচের ৭৩ মিনিটে ব্রাজিল আক্রমণে গেলেও তা ক্লিয়ার করে দেয় ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ পায় ব্রাজিল। রদ্রিগোর পাস থেকে বল পেয়ে জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় নেইমার। আরও একবার অসাধারণ সেভ করেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৮০ মিনিটে গোছানো আক্রমণ থেকে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করেন লুকাস পাকেতা। তবে তা আটকে দেন ডমিনিক লিভাকোভিচ।
ম্যাচের ৮২ মিনিটে রদ্রিগোর ক্রস থেকে হেড করেন রিচার্লিসন। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে রিচার্লিসনের পরিবর্তে পেড্রোকে মাঠে নামান তিতে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে কর্নার পায় ব্রাজিল। তবে তা থেকে কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
এরপর গোলের লক্ষ্যে একাধিক আক্রমণ করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় দু’দল। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য থেকে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ করে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া। ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।