মুখে স্বীকার না করলেও ২০১৮ ফাইনালে হারের বদলা নেওয়ার একটা সুপ্ত বাসনা কাজ করছিল জুর্গেন ক্লপের মধ্যে। অন্যদিকে দল নিয়ে অহেতুক সমালোচনায় বিরক্ত জিনেদিন চাইছিলেন সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে। দ্বিতীয়জন পারলেন কিন্তু প্রথমজনের বাসনা অতৃপ্তই রয়ে গেল। নিজেদের ডেরায় লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে এক পা বাড়িয়ে রাখল রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের জোড়া গোল এবং মার্কো আসেনসিওর একমাত্র গোলে আলফ্রেদো দি স্তেফানোয় উজ্জ্বল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
লিভারপুল নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ চলতি মরশুমে। অন্যদিকে সবধরনের প্রতিযোগীতা মিলিয়ে গত চারটে ম্যাচে জয় জিদানের দলকে কিছুটা এগিয়েই রেখেছিল কোয়ার্টারের প্রথম লেগের আগে। কিন্তু এদিন ম্যাচে নামার কয়েক ঘন্টা আগে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। চোটের কারণে আরেক ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস ছিটকে গিয়েছিলেন আগেই। প্রথম একাদশের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারকে হারিয়ে মাথায় হাত পড়ে জিদানের। মো সালাহ, সাদিও মানেদের বিরুদ্ধে জিদান সেন্ট্রাল ডিফেন্সে নামিয়ে দেন ন্যাচো ফার্নান্দেজ-এদের মিলিতাও জুটিকে। লিভারপুলের বিরুদ্ধে এই দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে রবিবাসরীয় এল ক্লাসিকো’র আগে স্বস্তি দেবে জিজৌকে।
প্রথমার্ধে এদিন আধিপত্য নির্ভর ফুটবল খেলে রিয়াল। ২৭ মিনিটে টনি ক্রুজের ঠিকানা লেখা লম্বা বল প্রথমে চেস্ট ট্র্যাপ করেন ভিনিসিয়াস। এরপর গোললাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসা অ্যালিসন বেকারকে দেখেশুনে ঠান্ডা মাথায় বল জালে রাখেন তিনি। ন’মিনিট বাদে প্রতি আক্রমণ থেকে গোল মার্কো আসেনসিওর। আলেকজান্ডার আর্নল্ডের দুর্বল হেড থেকে বল ধরে প্রথমে আগুয়ান বেকারের মাথার উপর দিয়ে তা চিপ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। এরপর ফাঁকা গোলে সেটিকে ঠেলে স্কোরলাইন ২-০ করেন তিনি। প্রথমার্ধে রিয়াল রক্ষণকে সেই অর্থে কোনও পরীক্ষার সামনে ফেলতে পারেননি সালাহরা। অবস্থা বেগতিক দেখে বিরতির আগেই নবি কেইটাকে তুলে থিয়াগো আলকান্তারাকে নামিয়ে দেন ক্লপ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আমুল বদলে যায় লিভারপুল। মরিয়া প্রচেষ্টা তাদের গোল এনে দেয় ৫১ মিনিটে। দিয়োগো জোটার পাস থেকে মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল তুলে নেন মোহামেদ সালাহ। কিন্তু সময় গড়াতেই ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। ৬৫ মিনিটে লিভারপুল রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোলটি তুলে নেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ভ্যাসকুয়েজের থ্রো-ইন থেকে বেনজেমার পা হয়ে বল মদ্রিচের পায়ে পৌঁছলে বল ধরে বক্সে প্রবেশ করেন ক্রোট তারকা। এরপর তা সাজিয়ে দেন ভিনিসিয়াসের জন্য। মদ্রিচের পাস থেকে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার চলতি বলে শট নিলে তা আটকাতে পারেননি বেকার।
ফিরমিনো, শাকিরিদের নামিয়েও এরপর আর ব্যবধান কমাতে পারেনি রেডস। সবমিলিয়ে ১-৩ গোলে হেরে আগামী সপ্তাহে অ্যানফিল্ডে কাজটা ভীষণ কঠিন হয়ে গেল লিভারপুলের জন্য। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে এক পা রেখেই আগামী রবিবার এল ক্লাসিকো জয়ের লক্ষ্যে নামবে জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ।