‘আমি আমার ফর্ম নিয়ে চিন্তিত নই।’ বাজে ফর্মে থাকা যেকোনো ক্রিকেটারকে ফর্ম নিয়ে জিজ্ঞেস করলে এমন গত্বাধা উত্তরই আসবে। ব্যতিক্রম হয়তো দু একজন। মুমিনুল হক ওই ব্যতিক্রমীদের কাতারে নেই। ফর্ম নিয়ে কথা বললে তা হেসেই উড়িয়ে দিচ্ছেন। হয়তো বাইরে সেটার প্রকাশ করতে দিচ্ছেন না। কিন্তু খেলা দেখলেই বুঝা যায় নিশ্চিত চাপে আছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
সদ সমাপ্ত সিরিজের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুমিনুলের গড় ছিল ৫৯ ছুইছুই। তিন ইনিংসে ব্যর্থতার পর সেটা নেমে আসল ৫০ এর নিচে। চট্টগ্রাম টেস্ট ২ রান করার পর ঢাকা টেস্টে ৯ ও শুন্য রানের ইনিংস। ঘরের মাঠে তার এমন রানখরতা অবাকই করেছে। প্রশ্ন উঠছে অধিনায়কত্বের ভারে কি নুয়ে পড়েছে মুমিনুলের ব্যাট?
সেই প্রশ্নের জবাব মুমিনুলই ভালো দিতে পারবে বলে মনে করছেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। মুমিনুলের ফর্মহীনতায় গতকাল হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘অধিনায়কত্বের প্রভাব থাকছে কি না এটা বড় প্রশ্ন। যদি থাকে আমরা এটা চাই না। আমরা তার ব্যাটিংটা চাই, এটা গুরুত্বপূর্ণ। একটা বলে আউট হয়েছিল- ব্যাট নামার আগেই বল ব্যাটে লেগে চলে গেছে। তার মানে ও আত্মবিশ্বাসী না। তবে চাপ সামলানো সহজ না। মুমিনুল চেষ্টা করছে না তা না। ম্যাচে গিয়ে ডেলিভার হচ্ছে না। হয়তো চাপ রয়ে গেছে ব্যাটিংয়ে।’
ঘরের মাঠ বিবেচনা করলে তুলনামুলক ভাবে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়েই ছিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে উইকেটই আগে বলে দিয়েছিল এর ফলাফল হবে ড্র! ঢাকা টেস্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিলেও উল্টো বাংলাদেশই পথ হারিয়ে বসে। দুই ইনিংসেই হাজির হয় চিরচেনা ব্যাটিং ধস। যা নিয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ সুজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কন্ডিশনে হার… ফলাফল যাই হোক, আমাদের প্রক্রিয়াও ভালো ছিল না। হার-জিত খেলার অংশ, হারতেই পারি। কিন্তু যেরকম কন্ডিশন ছিল বা যেরকম প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলেছি, বলব না আমরা আমাদের মান অনুযায়ী খেলেছি। ইতিবাচক দিক আছে অনেক কিছুই। তবে ফলাফলের কথা চিন্তা করলে ভালো হয়নি। ঢাকা টেস্টে দুই ইনিংসেই টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। দুই ইনিংসে একইরকম কেন হবে?’
তাতে টেকনিক্যাল সমস্যার চেয়ে মানসিক সমস্যাটাই বড় করে দেখা হচ্ছে। ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব আল হাসানও একই কথা বলেছিলেন। সুজনও সেটার ওপর জোর দিতে বললেন, ‘আমরা কোথাও আটকে আছি যেখান থেকে বের হতে পারছি না। মোমেন্টাম নষ্ট থাকে, আত্মবিশ্বাস অনেক কম থাকে। এমন কিছুও হয়তো হচ্ছে। উন্নতির সুযোগ থাকছেই। মূল ৩-৪ জন বোলার ছিল না- এগুলো অজুহাতের মতো। যারা খেলেছে তারা কেন পারবে না? সমস্যাটা কোথায় এটা বের করাই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক জড়তা রয়ে গেছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। ছেলেরা কতটুক স্বীকার করবে জানি না। কিন্তু ড্রেসিংরুমে মানসিক সমস্যার একটা বাধা রয়ে গেছে।’