গত বার ফাইনালে খেলা দুই দল। আজ, মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের মাঠে মুখোমুখি। এমনিতেই ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের ইতিহাসে মুম্বই বনাম দিল্লি বরাবরই তীব্র সঙ্ঘাতপূর্ণ এক দ্বৈরথ। আইপিএলের আমলে শহর বনাম শহর প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরওই বেড়েছে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে তফাত, আইপিএলে অন্যান্য রাজ্য বা বিদেশের ক্রিকেটারেরাও একটি শহরের হয়ে খেলতে পারেন।
দু’টি দলই চলতি প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলে দু’টিতে জিতেছে। প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েও যে ভাবে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ফিরে এসেছে, তা যে কোনও প্রতিপক্ষের মনেই উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। আবার ঋষভ পন্থ নামক তরুণ সিংহের নেতৃত্বে দিল্লি ক্যাপিটালস এ বারে আরও ডাকাবুকো ক্রিকেট খেলছে। মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেই পঞ্জাব কিংসের বড় রান তাড়া করে জিতেছেন ঋষভরা। স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন শিখর ধওয়ন। দিল্লির ভারতীয় ব্যাটিং বিভাগ এত শক্তিশালী যে, বিদেশি ব্যাটসম্যানদের টেক্কা দিতে পারে। জিভে জল এনে দেওয়ার মতো দ্বৈরথ হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। একদিকে যশপ্রীত বুমরা, ট্রেন্ট বোল্টদের গতি ও সুইং। আর তাঁদের মুখোমুখি শিখর ধওয়ন, পৃথ্বী শ, ঋষভ পন্থরা। দু’পক্ষই দুরন্ত ছন্দে, তাই আরও তীব্র লড়াই দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা। দিল্লির অস্ত্রশালাতেও গতির অভাব নেই। কাগিসো রাবাডার সঙ্গে অনরিখ নখিয়া— দারুণ সফল জুটি। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ফাস্ট বোলার নিয়মিত ভাবে ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতিবেগে বল করতে পারেন। গত বার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে রাবাডা-নখিয়া জুটির গতির তুফান দিল্লিকে ফাইনালে তোলার নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। তাই মুম্বই ব্যাটিংকেও অগ্নিপরীক্ষায় ফেলতে পারেন তাঁরা। তবে করোনা-বিভ্রান্তি কাটিয়ে নখিয়া এখনও দিল্লির প্রথম একাদশে আসেননি। শুরুতে বলা হয়েছিল, তাঁর পরীক্ষার ফল ‘পজ়িটিভ’ এসেছে। আবার বলা হল, সেই পরীক্ষার ফলই নাকি ঠিক নয়। নখিয়া অনুশীলনে যোগ দিলেন। তা বলে খেলানো হচ্ছে না কেন, সেটাই প্রশ্ন।
চেন্নাইয়ের স্পিন-সহয়াক, মন্থর পিচে খুব বেশি রান না তুলেও বোলিংয়ের দৌলতে দু’টি ম্যাচ জিতেছে মুম্বই। আবার দিল্লি শিশিরভেজা ওয়াংখেড়েতে বড় রান তাড়া করে জিতে দেখিয়েছে। তবে চেন্নাইয়ের মন্থর পিচ পরীক্ষা নেবে ধওয়ন, পন্থদের। সেখানে ইচ্ছা মতো শট খেলা মোটেও সহজ হবে না। এমনকি, মুম্বইয়ের কায়রন পোলার্ড এবং হার্দিক পাণ্ড্যের মতো আগ্রাসী ব্যাটসম্যানও রান করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন চেন্নাইয়ে। একমাত্র ব্যতিক্রম এবি ডিভিলিয়ার্স। তবে রোহিতরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন পোলার্ড রানে ফেরায়। তেমনই হার্দিকের ছ’বছর পূর্ণ হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে। যা নিয়ে আবেগে ভেসে তিনি বলেছেন, ‘‘ছ’টা অসাধারণ বছর কাটালাম। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’’ সব কোচ, কর্তা, সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন হার্দিক।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অলরাউন্ডার বল করছেন না কেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। কোচ মাহেলা জয়বর্ধনে এ দিন বলেছেন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে খেলার সময়ে হার্দিকের কাঁধে ছোটখাটো একটা চোট লাগে। সেই কারণে সাবধানতা নেওয়ার জন্যই তাঁকে বল করানো হচ্ছে না। ‘‘আমরা চাইছিলাম, হার্দিক এই মরসুমে বল করুক। তবে ও একটা বড়সড় চোট থেকে ফিরেছে। তার উপরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে সামান্য চোট লেগেছে।’’ যোগ করছেন, ‘‘আশা করছি, খুব শীঘ্রই ওকে বল করতে দেখা যাবে। আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না। এমন নয় যে, আমরা ইচ্ছা করে ওকে বল করাচ্ছি না।’’ চোটের অস্বস্তি নিয়েও হার্দিক দুর্দান্ত ফিল্ডিং করে চলেছেন এবং আগের ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নার এবং আব্দুল সামাদকে রান আউট করে ম্যাচ ঘুরিয়েও দেন।