সার্বিয়াকে উড়িয়ে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে ব্রাজিলের। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ জিতলেই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে তাদের। তবে ড্র করলেও সেলেসাওরা একটি কীর্তিতে নাম লেখাবে। প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়বে তারা। কিন্তু দলের ‘স্টার ম্যান’ নেইমার খেলতে পারবেন না এই ম্যাচে। নেইমারহীন ব্রাজিল নিজেদের কতটা মেলে ধরতে পারবে? দলে অবশ্য তারকার অভাব নেই। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরো বলেছেন, ‘সে আমাদের দলের সুপারস্টার। যে ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। কিন্তু সে ছাড়াও আমাদের ভালো মানের খেলোয়াড় আছে।’ প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনকে ১-০ গোলে হারানোয় সুইজারল্যান্ডের সামনেও সুযোগ। ব্রাজিলকে হারাতে পারলে শেষ ষোলো নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের, যদি গ্রুপের অন্য ম্যাচে ড্র করে সার্বিয়া-ক্যামেরুন।
বিজ্ঞাপন
সুইজারল্যান্ডের সেন্টারব্যাক নিকো এলভেদি মনে করেন, ব্রাজিল ফেভারিট হলেও তাদের হারানো অসম্ভব নয়। জার্মান ক্লাব বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখে খেলা এই ডিফেন্ডার বলেন, ‘বিশ্বকাপে এমন কোনো দল নেই যাদের হারানো যাবে না। আমরা চ্যালেঞ্জটা জানি। ব্রাজিল খুবই শক্ত প্রতিপক্ষ। কিন্তু আমরা লুকিয়ে থাকবো না। নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে প্রমাণ করে দেখাবো।’
নেইমারের না থাকাটা সুবিধা দেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুইস তারকা এলভেদি বলেন, ‘নেইমারের পজিশনে খেলার মতো যথেষ্ট ফুটবলার আছে ওদের। নেইমার না থাকায় আমার ঘুম যে বেশি ভালো হবে এমনটা নয়।’ গত বিশ্বকাপেও একই গ্রুপে ছিল ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড। রোস্তভ এরেনায় ফিলিপে কুটিনহোর গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় সুইসরা। স্টিভেন জুবেরের গোলে ব্রাজিলের কাছ থেকে কেড়ে নেয় পয়েন্ট। এর আগে ১৯৫০ সালের আসরেও সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল ব্রাজিল। বিশ্বকাপে শুধু সুইজারল্যান্ড, পর্তুগাল এবং হাঙ্গেরির বিপক্ষে জয় নেই ব্রাজিলের। আর বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকান দলের বিপক্ষে বাজে রেকর্ড সুইসদের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। ২০১৪তে ইকুয়েডরকে ২-১ গোলে হারানোর পর লাতিনদের বিপক্ষে শেষ ৭ ম্যাচে জয়হীন সুইজারল্যান্ড। হার পাঁচটি। তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুপ্রেরণা হতে পারে সুইজারল্যান্ডের। সেলেসাওদের বিপক্ষে শেষ চার দেখায় দু’বার জিতেছে দলটি (এক ড্র ও এক হার)। ব্রাজিলের বিপক্ষে সুইসদের তুরুপের তাস হতে পারেন ব্রিল এমবোলো। তার গোলেই ক্যামেরুনের বিপক্ষে জয় পায় সুইজারল্যান্ড। জাতীয় দলে শেষ চার ম্যাচে তিন গোল করেছেন ক্যামেরুনিয়ান বংশোদ্ভূত স্ট্রাইকার এমবোলো।
আর তিনটিই ছিল জয়সূচক গোল। ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না নেইমার। তাতে কৌশলে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে কোচ তিতেকে। সম্ভবত একাদশে ঢুকতে যাচ্ছেন ফ্রেড। রাইটব্যাক দানিলোও চোটে পড়েছেন। গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচে পাওয়া যাবে না তাকে। এতে অভিজ্ঞ দানি আলভেজের মাঠে নামার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। ৩৯ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার গত বিশ্বকাপ মিস করেছিলেন। সার্বিয়ার বিপক্ষে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রদ্রিগো। তাকে শুরুর একাদশে দেখা যাবে কিনা বলা যাচ্ছে না। তবে কাসেমিরো চান রদ্রিগো নেইমারের জায়গায় খেলুক। ব্রাজিলের একাদশ হতে পারে এমন- আলিসন বেকার, এডার মিলিতাও, থিয়াগো সিলভা, মার্কিনহস, আলেক্স সান্দ্রো, কাসেমিরো, ফ্রেড, লুকাস পাকেতা, রাফিনহা, রিচার্লিসন, ভিনিসিউস জুনিয়র। সবার নজর রিলার্চিসনে গত তিনটি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ‘নাম্বার নাইন’ পজিশনে ভালো করতে পারেনি কেউই। আক্ষেপটা বোধহয় এবার ঘুচাতে যাচ্ছেন রিচার্লিসন। সার্বিয়ার বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই জিতেছে ব্রাজিল। কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও ডি লিমার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি। ২০১৮তে অভিষেকের পর ১৯ গোল করেছেন রিচার্লিসন। এই সময়ে ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল তারই।