মঞ্চটা যেখানে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের, সেখানে ম্যাচ এমন রোমাঞ্চকর হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক!
যেন ফুটবল ম্যাচ নয়, নব্বই মিনিটের টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এক রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্রের মঞ্চায়নই হলো ইতিহাদ স্টেডিয়ামে। যেখানে দ্বিতীয় মিনিটের গোল, শেষ দিকের গোল – সব ছিল। বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারের গোল যেমন ছিল, ছিল ব্যালন ডি অরের স্বপ্নে বিভোর এক অসাধারণ স্ট্রাইকারের জোড়া গোলের কীর্তি। একের পর এক রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচটা দেখল স্নায়ু ঠাণ্ডা রেখে মারা পানেনকা পেনাল্টির ঘটনাও। দেখল বিশ্বের অন্যতম প্রতিভাবান দুই তরুণের আলো কেড়ে নেওয়া। দেখল আপাতদৃষ্টিতে অপাংক্তেয় হয়ে যাওয়া এক খেলোয়াড়ের গোল করে কোচকে বার্তা দেওয়া, ‘আমিও পারি!’
ম্যাচের আগে আলোচনা হচ্ছিল দুই দলের চোটজর্জর ও ভঙ্গুর রক্ষণভাগ নিয়ে। সিটির মূল দুই ফুলব্যাক জোয়াও কানসেলো ও কাইল ওয়াকারের কেউই এই ম্যাচে ছিলেন না। কাজ চালানো রাইটব্যাক জন স্টোনসও দুই সপ্তাহ ধরে চোটের কারণে মাঠের বাইরে। তিনজনের মধ্যে তাঁর অবস্থাই অপেক্ষাকৃত ভালো দেখে তাঁকেই রাইটব্যাক হিসেবে নামান হলো। ওদিকে লেফটব্যাক হিসেবে নামলেন মৌসুমের বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে বসে থাকা আলেকসান্দর জিনচেঙ্কো।
রিয়ালের অবস্থাও যে খুব বেশি ভালো ছিল, বলা যাবে না। মূল সেন্টারব্যাক ডেভিড আলাবা থেকে শুরু করে লেফটব্যাক ফারলাঁ মেন্দি, ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরো – সবাই চোটে। তাও কাসেমিরোর চেয়ে বাকি দুজনের অবস্থা মোটামুটি ভালো দেখেই কি না, রিয়াল কোচ আনচেলত্তি দুজনকেই নামিয়ে দিলেন। দুই দলের এই জোড়াতালি মারা রক্ষণ দর্শকদের উপহার দিল সাত গোলের রোমাঞ্চ।
ম্যাচের দুই মিনিটেই এগিয়ে গেল সিটি। রিয়াল রক্ষণের বাঁদিকে থাকা দুজন আলাবা ও মেন্দি কেউই পুরো ফিট নন, ওদিক থেকেই বল পায়ে আক্রমপণ রচনা করলেন রিয়াদ মাহরেজ। রিয়াল তারকারা মাহরেজের পায়ের কাজে মন্ত্রমুগ্ধের মতো চেয়েই রইলেন শুধু। মাহরেজের ক্রসে মাথা ছোঁয়ানো ছাড়া তেমন কোনো কাজই ছিল না বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনার।