নেতৃত্বের অভিষেকেই বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ২২২ রান তাড়া করে দলকে প্রায় জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিলেন। শেষ দুই বলে দরকার ছিল ৫ রান। সঞ্জু স্যামসন কঠিন সময়েও দায়িত্বটা নিলেন নিজ কাঁধেই। সুযোগ থাকার পর সিঙ্গেলস এড়িয়ে গেলেন।
৬২ বলে ১১৯ রানে থাকা একজন ব্যাটসম্যানের এমন আত্মবিশ্বাস তো থাকারই কথা। শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকালে টাই, ছক্কা হলে জয়। স্যামসন ঝুঁকিটা নিলেন। হতে পারতেন ম্যাচের হিরো। কিন্তু হলো না। শেষ বলটি উঁচু করে কভারে তুলে দিয়ে ক্যাচ হলেন। বনে গেলেন ট্রাজিক-হিরো।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে শেষ বলে এসে হতাশায় ডুবেছে রাজস্থান রয়্যালস। হাইস্কোরিং ম্যাচে ৪ রানে জিতে শেষ হাসি হেসেছে পাঞ্জাব কিংস।
২২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে দলের খাতায় কোনো রান উঠতেই বেন স্টোকসকে হারিয়ে বসে রাজস্থান। ক্রিজে আসেন স্যামসন। চোখের সামনেই দেখেন ২৫ রানে হাওয়া ২ উইকেট।
কিন্তু এসব কিছুই টলাতে পারেনি রাজস্থান অধিনায়ককে। জস বাটলার (১৩ বলে ২৫), শিভাম দুবে (১৫ বলে ২৩), রিয়ান পরাগের (১১ বলে ২৫) ছোট ছোট ঝড়কে একসঙ্গে করে নিজে টর্নেডো বানান স্যামসন।
চোখ ধাঁধানো সব শটে পাঞ্জাব বোলারদের নাভিশ্বাস তুলতে থাকেন। ৫৪ বলে তুলে নেন এবারের আসরের প্রথম আর আইপিএলে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি। কিন্তু শেষটা তো করতে পারলেন না।
এর আগে লোকেশ রাহুল, ক্রিস গেইল, দীপক হুদাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ২২১ রানের পাহাড় গড়ে পাঞ্জাব কিংস। টস হেরে ব্যাট করতে নেমেই মারমুখী চেহারায় হাজির হয় লোকেশ রাহুলের দল। মোস্তাফিজুর রহমান আর চেতন সাকারিয়া কিছুটা আটকে রেখেছিলেন শুরুতে। প্রথম উইকেটটা পেতে পারতেন মোস্তাফিজ।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই টাইগার পেসারের হাতে বল তু্লে দেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। তার ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে মায়াঙ্ক আগরওয়াল নিশ্চিত এলবিডব্লিউ ছিলেন।কিন্তু আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে স্যামসনও রিভিউ নেননি।
আগরওয়াল (৯ বলে ১৪) অবশ্য খুব বেশিদূর যেতে পারেননি। পরের ওভারেই তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান সাকারিয়া। উইকেটে আসেন ক্রিস গেইল। এবার গেইলকে নিয়ে এগোতে থাকেন রাহুল।
২৮ বলে ৪ চার আর ২ ছক্কায় ৪০ রান করে অবশেষে সাজঘরের পথ ধরেন গেইল। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ১০৫ রানের বড় জুটিতে দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেন রাহুল আর হুদা। দুজনই ছিলেন বিধ্বংসী চেহারায়।
১৮তম ওভারে এসে আউট হন হুদা। ২৮ বলে তার ৬৪ রানের দানবীয় ইনিংসে ছিল ৪টি চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা। এরপর নিকোলাস পুরান ফেরেন গোল্ডেন ডাকে। তবে ততক্ষণে দুইশ পার হয়ে গেছে পাঞ্জাবের।
রাহুল সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে এসে ফিরেছেন ইনিংসের শেষ ওভারে। ৫০ বলে ৭ চার আর ৫ ছক্কায় পাঞ্জাব অধিনায়ক করেন ৯১ রান। তাতেই ৬ উইকেটে ২২১ রানের পুঁজি দলের।
মোস্তাফিজ শুরুতে ভালো বল করলেও ১৯তম ওভারে এসে দিয়েছেন ১৯ রান। ফলে ৪ ওভারে ৪৫ রান খরচ করেও উইকেট পাননি। ৩টি উইকেট নিয়েছেন চেতন সাকারিয়া, ক্রিস মরিসের শিকার দুটি।