Image default
খেলা

তরুণরা এখন ম্যাচ জেতাতে পারেন

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আস্থার প্রতিদান দিলেন দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং নুরুল হাসান সোহান। সিরিজ শুরুর আগে টাইগার অধিনায়ক খুব বড় গলায় বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় সোহান, আফিফ, শামীম নিজেদের খেলা শেষ করার ক্ষেত্রে সামর্থ্যের ছাপ রেখেছে। তারা বেশ ভালো ছন্দেও আছে। আমি তাদের উপর পূর্ণ আস্থা রাখছি যে- তারা তাদের প্রতিভা ও স্কিলের প্রতি সুবিচার করতে পারবে।

সেটা যে আবেগতাড়িৎ সংলাপ নয়, ছোট ভাইদের প্রতি বাড়তি দরদ সম্বলিত কথা বার্তা ছিল না- আজ রাতে শেরে বাংলায় সে সত্যেরই জানান দিলেন আফিফ আর সোহান। তারা দু’জন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, ‘আমরা পারি। দল জিতিয়ে ম্যাচ শেষ করে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফিরতে পারি।

টার্গেট বড় ছিল না একদমই। জিততে দরকার ছিল ১২২ রানের। শুরুটা ভাল হয়নি মোটেও। দুই অসি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক আর জস হ্যাজেলউডের দ্রুত গতির ডেলিভারিতে খুব অল্প সময়ে আউট হলেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার (০) আর নাইম (৯)। বিদায় নিলেন ২১ রানের মধ্যেই। অসি ফিল্ডারদের বদান্যতায় বার কতেক বেঁচে যাওয়া শেখ মাহদি আর সাকিব আল হাসান শুরুর ধাক্কা সামলে দিলেন।

কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে রণে ভঙ্গ দিলেন দু’জনই। ভাল খেলতে খেলতে অসি থার্ড সিমার অ্যান্ড্রু টাইয়ের ফুললেন্থ ডেলিভারিতে লাইন মিস করে বোল্ড সাকিব (১৭ বলে ২৩)। আর বেশ কয়েক দফা ক্যাচ তুলেও বেঁচে যাওয়া শেখ মেহেদি (২৪ বলে ২৩) ফিরলেন লেগস্পিনার জাম্পার বলে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে। এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ শূন্য রানে বোল্ড আউট হলেন বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারের বাইরের বলকে টেনে ভিতরে এনে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ল। ১২২ রানের ছোট্ট টার্গেটকেও মনে হলো বড়।

কিন্তু ওই সময় হাল ধরলেন আফিফ আর সোহান। ৬৭ রানে ইনিংসের অর্ধেক শেষ। বড় ভাইরা সব আউট। পিছনে আছে শুধু অনুজপ্রতিম শামীম। যা করার আমাদেরই করতে হবে। স্টার্ক, হ্যাজেলউডের গতি আর স্লো পিচে টাইয়ের বুদ্ধিদীপ্ত জেন্টল মিডিয়াম পেস এবং দুই স্পিনার জাম্পা ও অ্যাস্টন অ্যাগারের ঘূর্ণি বলে ভয় পেলে চলবে না। আমাদের উইকেটেও থাকতে হবে। রানের চাকাও সচল রাখতে হবে। একজন মেরে খেলবো, আলগা বল পেলেই চালাবো আর অন্যজন অন্যপ্রান্ত আগলে রাখবো।

এ চিন্তায় নিয়ে খেলেই কঠিন হয়ে পড়া হিসেব সহজ করে দেখালেন আফিফ আর সোহান। বাঁ-হাতি আফিফ উপহার দিলেন ৩১ বলে ৩৭ রানের দারুণ ইনিংস। আর উইকেটে গিয়ে ছটফট না করে এদিক ওদিক চালিয়ে খেলা বাদ দিয়ে সোহান খেললেন বল পিছু ২১ বলে ২২ রানের ইনিংস। তাতেই গড়ে উঠল ৫৬ রানের অবিচ্ছন্ন জুটি। আর বাংলাদেশ ৮ বল আগেই পেল ৫ উইকেটের জয়।

একটা সময় বাংলাদেশের জয়ের জন্য নির্ভর করতে হতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর। পঞ্চ পান্ডবের কেউ জ্বলে না উঠলে যেন ম্যাচই জেতা সম্ভব নয়, এমন একটা ধারণাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এমনকি যেদিন পঞ্চ পান্ডব ফেইল করতেন, সেদিন সত্যি সত্যি পুরো দলটাকেই নিষ্প্রভ মনে হতো। জয় তো দুরে থাক।

কিন্তু এখন তরুণরা শিখে গেছে, কিভাবে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। অসিদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও ঠিক এ দৃশ্য দেখা গেছে। তরুণ স্পিনার নাসুম আহমেদ দেখালেন, কিভাবে বল ঘুরাতে হয়। তার বলের সামনেই নাস্তানাবুদ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ানরা। সেদিন বল হাতে অসাধারণ খেলেছিলেন আরেক তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম।

আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও তরুণরাই জেতালেন। পঞ্চ পান্ডবের দু’জন আছেন এখন দলে। সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাকিব ব্যাট এবং বল হাতে নিজেকে পুরোপুরি ঢেলে দেয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়েছে তরুণদের দৃঢ়তাতেই। বল হাতে মোস্তাফিজ হয়তো দারুণ বোলিং করেছেন। কিন্তু তরুণ পেসার শরিফুলও কম যাননি। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ২ উইকেট নিয়েছেন আজও।

আর ব্যাট হাতে তো আফিফ এবং সোহানের প্রশংসা যথেষ্ট হবে না। শেখ মেহেদী প্রথমে সাকিবের সঙ্গে জুটি বেধে প্রাথমিক বিপর্যয় থামান। এরপর আফিফ হোসেন এবং নুরুল হাসান সোহান যেভাবে খেললেন, তা রীতিমত বিস্ময়কর। তাদের মধ্যে ভয়ডরের কোনো লেশ মাত্র ছিল না। ২-০’তে এগিয়ে যাওয়া টাইগাররা যে এখন সিরিজ বিজয়ের পথেও এগিয়ে গেল অনেকটা।

Related posts

টেক্সাস স্টেট এনসি স্টেট এনসিএএ পরাজয়ের মধ্যে বিভিন্ন 3-পয়েন্ট লাইনের সাথে মহিলাদের মার্চ ম্যাডনেস খেলেছে

News Desk

WNBA সম্প্রসারণ খসড়াতে Valkyries Liberty’s Kayla Thornton নির্বাচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে

News Desk

ড্যান হার্লির প্রত্যাখ্যান একটি লেকার্স ব্র্যান্ডের জন্য আরেকটি অপমান যা তার দীপ্তি হারিয়েছে

News Desk

Leave a Comment