Image default
খেলা

তিন সিনিয়রের ব্যাটে লড়াকু পুঁজিতে বাংলাদেশ

বিশ্বকাপ সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ২৫৭ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাল বাংলাদেশ দল। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয় পেতে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলকে করতে হবে ২৫৮ রান।

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা মনঃপুত ছিল না। দলীয় শতরান হওয়ার আগেই সাজঘরে ফিরেছিলেন চার ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে শতরানের জুটি ও জোড়া ফিফটি করে দলকে লড়াকু সংগ্রহে পৌঁছে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহীম।

তবু রয়ে গেছে একটি চিন্তা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে তিনটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। সেই তিন ম্যাচেই দলীয় সংগ্রহ ছিল ২৬০ রানের। অর্থাৎ ২৬০ রানের কম করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কখনও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তাই বোলারদের সামনে অপেক্ষা করছে চ্যালেঞ্জিং সময়।

হোম অব ক্রিকেটের দুই নম্বর উইকেটে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। নতুন বলে একপাশ থেকে গতির ঝড় তোলেন ডানহাতি পেসার দুশমন্ত চামিরা, অন্য পাশে নিখুঁত লাইন-লেন্থের প্রদর্শনী করেন বাঁহাতি ইসুরু উদানা। নিজের প্রথম দুই ওভারের মধ্যে ১০টি ডেলিভারিতেই ১৪০+ প্রতি ঘণ্টা গতিতে করেন চামিরা।

অবশ্য প্রথম উইকেটের ক্ষেত্রে চামিরার গতির চেয়ে লিটন দাসের দায়ই ছিল বেশি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি ছিল ১৪৬.৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতির। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে ছিল হালকা আউটসুইংও, সেটি জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন লিটন। সাজঘরে ফেরেন শূন্য রানে। সবশেষ পাঁচ ইনিংসে লিটনের তৃতীয় শূন্য এটি।

শুরুতেই লিটনকে হারানোর পর পাওয়ার প্লে’তে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। প্রথম ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে রান ওঠে ৪০। রানের জন্য ছটফট করতে করতে নিজের উইকেট হারান সাকিব। অতিরিক্ত ডট খেলে ফেলায় চাপ সরানোর লক্ষ্য উইকেট ছেড়ে মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু ধরা পড়ে যান লং অনে দাঁড়ানো পাথুম নিসাঙ্কার হাতে। মাত্র ২ ওভারের স্পেলে মূল্যবান উইকেটটি নিয়ে যান দানুশকা গুনাথিলাকা।

সাকিব আউট হওয়ার সময় দলীয় সংগ্রহ মাত্র ৪৩ রান। শুরুর এই চাপটা ভালোভাবেই সামাল দেন তামিম ও মুশফিক। দুজন মিলে ৬৪ বলে গড়ে ৫৬ রানের জুটি। ইনিংসের ২০তম ওভারে প্রথম ছক্কা হাঁকান তামিম, পরের ওভারে স্লগ সুইপে সীমানাছাড়া করেন মুশফিকও। এক ওভার পর ক্যারিয়ারের ৫১তম ফিফটি তুলে নেন টাইগার অধিনায়ক।

যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে, তখনই গড়বড় পাকান তামিম। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় নিজের উইকেটটি উপহারই দিয়ে আসেন প্রতিপক্ষকে। ধনঞ্জয় ডি সিলভা বোলিং রানআপ শুরুর আগেই তামিম সরে যান অনসাইডে। যা দেখে চতুর ধনঞ্জয় করেন ইয়র্কার লেন্থের ডেলিভারি। যা ঠেকাতে গিয়েও ব্যাটে লাগাতে পারেননি তামিম। বল আঘাত হানে প্যাডে, আউট দেন আম্পায়ার।

ব্যাটে লেগেছে ভেবে রিভিউ নিয়েছিলেন তামিম। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট-বলের দূরত্ব ছিল স্পষ্ট। ফলে থেমে যায় তামিমের ৭০ বলে ৫২ রানের ইনিংস, নষ্ট হয় প্রথম রিভিউ। এরপর সবাইকে অবাক করে দিয়ে মুখোমুখি প্রথম বলেই স্কুপ খেলার চেষ্টা করেন পাঁচ নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিঠুন। যা তার ব্যাটে-বলে হয়নি, লেগ বিফোর আউট দেন আম্পায়ার। তামিমের মতো মিঠুনও নষ্ট করেন আরেকটি রিভিউ।

দলীয় সংগ্রহ ১০০ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কঠিন চাপে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন ব্যক্তিগত সম্পর্কে দুই ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহীম। প্রতি ওভারে বাউন্ডারি হাঁকানোর চেয়ে এক-দুইয়ের দিকেই বেশি মনোযোগ দেন দলের অন্যতম অভিজ্ঞ এ দুই ব্যাটসম্যান। যার সুফলও পায় বাংলাদেশ।

মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে ৪৩তম ওভারে দলীয় ২০০ রান পূরণ করে ফেলে টাইগাররা। ইনিংসের ৩১ থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৯ রান পায় বাংলাদেশ। এরই মাঝে মুশফিক তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪০তম ফিফটি। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলকে নিয়ে যান বড় সংগ্রহ গড়ার কাছে।

অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির কাছে পৌঁছে গেলেও, মুশফিকের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে দৃষ্টিকটু এক শটে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ যখন পুরোপুরি বাংলাদেশের হাতে, তখন রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো উদানার হাতে। ফলে সমাপ্তি ঘটে তার ৮৭ বলে ৮৪ রানের উজ্জ্বল ইনিংসের। যেখানে ছিল ৪টি চারের সঙ্গে ১ ছয়ের মারে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মুশফিকের জুটিটি ছিল ১০৯ রানের।

মুশফিক ফেরার পর খানিক মন্থর হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ ৭ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ৪৯ রান। ক্যারিয়ারের ২৪তম ফিফটি করে ধনঞ্জয়ের তৃতীয় উইকেটে পরিণত হন মাহমুদউল্লাহ। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৭৬ বলে ৫৪ রান। যেখানে ছিল ২ চার ও ১ ছয়ের মার।

শেষদিকে আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংস। বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১৩ রানে। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সফলতম বোলার পার্টটাইম স্পিনার ধনঞ্জয় ডি সিলভাই। তিনি ১০ ওভারে ৪৫ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট।

Related posts

প্রাক্তন তারকা লাইনব্যাকার বলেছেন যে সুপার বোল চ্যাম্পিয়নের ঘটনাটি এনএফএলের তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করা উচিত

News Desk

এনএফএল প্রি-শোতে সিবিএস রকিং এখনও আপনার সময়কে মূল্য দেয় না

News Desk

স্টেফানি ডলসন কেন ফ্রি এজেন্সিতে লিবার্টি ছেড়েছিলেন: ‘একটি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি যা ঘটতে হয়েছিল’

News Desk

Leave a Comment