চলমান সিরিজের আগ পর্যন্ত, করোনা পরবর্তী সময় থেকে ১৭টি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে তারা। ব্যাটার হিসেবে অধিনায়ক জো রুট সাফল্য পেলেও দল হিসেবে একের পর এক ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। কোচও পদত্যাগ করেন। ফলে বাধ্য হয়েই নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে হয়েছে ইসিবিকে।
টেস্ট দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তী ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। আর নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের কাঁধে। তিনিও জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। এই দুই কিউইর যুগলবন্দিতে সাদা পোশাকে নতুন যুগের শুভ সূচনা করেছে ইংল্যান্ড।
লর্ডস টেস্টের পর ট্রেন্টব্রিজেও সফরকারী নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে ইংলিশরা। ট্রেন্টব্রিজ টেস্ট জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বেন স্টোকস। গতকাল ম্যাচের পঞ্চম দিন ২৮৪ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। এতে ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় প্রায় আড়াই সেশনে ২৯৯ রান। টি-টোয়েন্টির এই যুগে লক্ষ্যটা সহজ মনে হলেও কার্যত এটা কঠিন ছিল। কারণ, টেস্টের পঞ্চম দিন এত অল্প সময়ে এই রান করা যেকোনো দলের জন্যই কঠিন। চাপ থাকে অনেক। কিন্তু ওই যে বললাম, নতুন যুগের শুভ সূচনা। স্টোকস-ম্যাককালামের হাত ধরে সেই কাজটিই দুর্দান্তভাবে শুরু করলো স্বাগতিকরা।
চা-বিরতির সময় ইংল্যান্ডের রান ছিল ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩৯, ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক বেন স্টোকস ও জনি বেয়ারেস্টো। শেষ সেশনে ৩৮ ওভারে তাদের করতে হবে আরও ১৬০ রান। যা একরকম অবিশ্বাস্য! আর জিততে হলে খেলতে হবে টি-টোয়েন্টি মেজাজে। আবার পরাজয়ের শঙ্কাও ছিল। এমন অবস্থায় জয়ের জন্যই খেললেন ইংলিশ দুই ব্যাটার এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টোকস।
৫০তম ওভারের শেষ বলে কাভার পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন বেন স্টোকস। এর পরই এক হাতে ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। যেন নতুন যুগের বার্তা। একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা। ৭০ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন স্টোকস। এর আগে অবশ্য জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান জনি বেয়ারেস্টো। তিনি ৯২ বলে ১৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তার উইলোতে ছিল ৭টি ছক্কা ও ১৪টি চারের মার। এর আগে অ্যালেক্স লিচ ৪৪ ও ওলি পোপ ১৮ রান করেন। তবে প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করা জো রুট এবার মাত্র ৩ রান ফিরে গেছেন।
একনজরে
প্রথম ইনিংস: নিউজিল্যান্ড ৫৫৩/১০
ডেরিল মিচেল ১৯০, টম ব্লান্ডেল ১০৬, অ্যান্ডারসন ৩/৬২, স্টোকস ২/৮৫
ইংল্যান্ড: ৫৩৯/১০
জো রুট ১৭৬, ওলি পোপ ১৪৫, বোল্ট ৫/১০৬, ব্রেচওয়েল ৩/৬২
দ্বিতীয় ইনিংস: নিউজিল্যান্ড ২৮৪/১০
ডেরিল মিচেল ৬২*, উইল ইয়ং ৫৬, ব্রড ৩/৭০, অ্যান্ডারসন ২/২০
ইংল্যান্ড: ২৯৯/৫
জনি বেয়ারেস্টো ১৩৬, বেন স্টোকস ৭৫, বোল্ট ৩/৯৪, হ্যানরি ১/৬৭
ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী