দুটি সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে লিওনেল মেসি। এক. আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা তুলে ধরার এবং দুই. কোপায় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্টেন বুট জেতার। ফুটবলশিল্পী মেসি নিশ্চয়ই প্রথমটাই আগে চাইবেন।
ফুটবলকে অনেক দিয়েছেন মেসি। তারপরও মহাতারকার অতৃপ্তি দেশকে একটা ট্রফি উপহার দিতে না পারার। এই না পারায় যেমন সারাক্ষণ তার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তেমন তার বিশ্বব্যাপী ভক্তদেরও। এবার কি সেই না পাওয়ার আক্ষেপ ঘুঁচবে? এই তো সেমিফাইনালে পা থেকে রক্ত ঝরতে থাকলেও মেসিকে থামানো যায়নি খেলা থেকে। আর্জেন্টিনা যখন টাইব্রেকার একটার পর একটা লক্ষ্য ভেদ করছিল তখন প্রতিবার মেসির শারীরিক ভাষা বলে দিচ্ছিন মাঠে কতটা আবেগ নিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি।
নিজের শটটিতে নিঁখুত গোল করে তাকিয়ে ছিলেন সতীর্থদের দিকে। তার মুখে শেষ হাসি ফুটিয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কলম্বিয়ার সামনে চীনের প্রচারী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গোলরক্ষ এমি। তিনটি শট ঠেকিয়ে দলকে তুলে নিয়েছেন ফাইনালে। ফাইনালমঞ্চে আগেই পা রেখে ব্রাজিলের নেইমার তো আর্জেন্টিনাকেই চেয়েছিলেন। সেটা মনের কথা হোক আর কথার কথা হোক- বাস্তবতা হলো বিশ্ব এখন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা এবং মেসি-নেইমার দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায়।
এমন এক ফাইনালের অপেক্ষায়ই তো থাকেন ফুটবলপ্রেমীরা। বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব এখন মেসি-নেইমারে বিভক্ত। দেখার অপেক্ষা কে হাসেন শেষ হাসি? দেশের হয়ে প্রথম ট্রফি জয় এবং সেটা যদি হয় ব্রাজিলকে হারিয়ে তাহলে তো কথাই নেই। মেসি আরও রক্ত ঝরিয়ে হলেও প্রাণপণ চেষ্টা করবেন ব্রাজিলের মাটিতে ব্রাজিলকে হারিয়ে ট্রফিটা দেশে নিয়ে যেতে।
শিরোপা জেতার লক্ষ্যে গোল্ডেন বুট কে জিতলেন তা নিয়ে নিশ্চয়ই কোনো মাথাব্যাথা নেই মেসির। তার চাই ট্রফি। ফাইনালে গোল করলে এমনিতেই ব্যক্তিগত সেরা গোলদাতার ট্রফিটা নিশ্চিত হবে তার। এমন কী গোল না করলেও হতে পারে। কারণ ৪ গোল নিয়ে তিনিই আছেন শীর্ষে। তার পেছনে যে আছেন সেই লাউতারো মার্টিনেজের গোল ৩ টি। মেসিকে টপকাতে হলে মার্টিনেজকে ফাইনালে গোল করতে হবে দুটি। একটি করলে হবে সমান সমান।
ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের নেইমার ও লুকাস পাকুয়েতার দুটি করে গোল। মেসির সমান্তরালে আসতে তাদের করতে হবে ডাবল। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের দুই দল পেরুর আন্দ্রে কারিল্লো ও গিয়ানলুকা লাপাদুলা এবং কলম্বিয়ার লুইজ দিয়াজেরও দুটি করে গোল। মেসিকে টপকিয়ে গোল্ডেন বুট জেতা কঠিন নেইমার, পাকুয়েতাসহ দুই গোল করা ৫ জনের। মেসির সতীর্থ লাউতারো মার্টিনেজের একটা সুযোগ থাকবে।
কারণ ফাইনালে মেসি ব্রাজিলের জালে বল পাঠাতে মার্টিনেজকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন বেশি। ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার ইতোমধ্যেই আর্জেন্টাইন সমর্থকদের হৃদয়ে ও ভরসাস্থলে ঢুকে গেছেন। তাই গোল্ডেন বুটের লড়াইটা মেসির সঙ্গে হতে পারে তারই সতীর্থ মার্টিনেজের সঙ্গে।