মুসলিমদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক এবং নারীদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের কারণে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত মিডিয়াম পেসার ওলি রবিনসন। কিন্তু রবিনসনের ওপর করা এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছেন খোদ বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড রবিনসনকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করার পরপরই টুইট করেছিলেন ব্রিটেনের কালচারাল সেক্রেটারি ওলিভার ডওডেন। সেখানে ইসিবি’র সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করার কথা বলেছিলেন তিনি। টুইটে ডওডেন ব্যাখ্যা করেছিলেন, ঘটনাটি যখন ঘটেছিল তখন রবিনসন ছিল টিনএজার। শুধু তাই নয়, এ কাজের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিল রবিনসন।
২০১২, ২০১৩ সালের ভাইরাল হওয়া টুইটগুলি রবিনসন যখন করেছিলেন তখন তার বয়স ছিল ১৮-১৯; কিন্তু আট বছর আগে করা তার ভুলের জন্যও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন রবিনসন। তাতেও নিষেধাজ্ঞা আটকায়নি। বুধবার ইংল্যান্ডের লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের এই তরুণ অল-রাউন্ডারের।
এই টেস্টের আগে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে ‘মোমেন্ট অব ইউনিটি’ নামক একটি ক্যাম্পেইনের সামিল হন লর্ডসে। এ ঘটনার পরই আট বছর আগে রবিনসনের একাধিক বৈষম্যমূলক টুইট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমদিনের খেলার পর পুরনো টুইটের কারণে সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা চেয়েছিলেন রবিনসন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি লজ্জিত। আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই আমি বর্ণবাদী কিংবা যৌনতাবাদী নই।’
এমন ক্ষমা চাওয়ার পরও আটকায়নি রবিনসনের নিষেধাজ্ঞা। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড তার বিরুদ্ধে তদন্তের অঙ্গীকারের পাশাপাশি সব রকমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে।
রবিনসনের এই ঘটনার মিশ্র পতিক্রিয়া চলছে ক্রিকেট মহলে। কেউ তার কড়া সমালোচনা করেছেন তো কেউ আবার এই শাস্তিকে কঠোর বলে ইংলিশ ফাস্ট বোলারের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। এ ঘটনায় ভারতীয় দলের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেলেন।
অশ্বিন নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘অলি রবিনসনের মন্তব্য ঘিরে মানুষের অসন্তোষের ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারছি। তবে সত্যি বলতে এমন দুর্দান্তভাবে টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরু করার পর তার নিষেধাজ্ঞায় একটু হলেও খারাপ লাগছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এই নিষেধাজ্ঞা ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
প্রথম টেস্ট ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ৪২ রানের ইনিংসও খেলেন রবিনসন। তবে আপাতত তাকে নিষেধাজ্ঞার জেরে ইংল্যান্ডের জৈব বলয় ছাড়তে হচ্ছে। বোর্ড তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলেও তার কাউন্টি দল সাসেক্স ২৭ বছর বয়সী রবিনসনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেবে না বলেই জানিয়েছে।