শিক্ষানবীশ বনাম মাস্টার ডিগ্রি করা ছাত্রের যুদ্ধ বলতে পারেন! আবার একলব্য বনাম দ্রোণাচার্যর যুদ্ধও বলতে পারেন! শনিবাসরীয় ওয়াংখেড়েতে অধিনায়কত্বের দিক থেকে দেখলে, ঋষভ পন্থ বনাম মহেন্দ্র সিং ধোনির যুদ্ধের যে কোনও একটা নামকরণ করা যায়। শিক্ষানবীশ বনাম মাস্টার ডিগ্রি ছাত্রের লড়াই কারণ– ক্যাপ্টেন্সির পৃথিবীতে পন্থ একেবারেই আনকোরা। শনিবারই প্রথম বার আইপিএলে (IPL) অধিনায়কত্ব করতে নামবেন।
উলটোদিকে, মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্বে মাস্টার ডিগ্রি করা আছে মোটামুটি! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার পরেও ধোনির মগজাস্ত্র যে বিশ্বজুড়ে ঠিক কতটা সমাদৃত হয়, নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার একদিক থেকে দেখলে, শনিবারের ঋষভ বনাম ধোনির যুদ্ধ শিষ্য আর গুরুর লড়াইও বটে! ঋষভও ধোনির মতো উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
কিন্তু মুশকিল হল, ক্যাপ্টেন্সির দুনিয়ায় একজন আর একজনের যতই গুরুসম হোন না কেন, দু’জনের টিমগত অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন। দিল্লি ক্যাপিটালস গত বারের আইপিএল ফাইনালিস্ট। দু’বছর আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেন্টরশিপে নবজন্ম ঘটেছিল দিল্লির। গত বার সৌরভ ছিলেন না, কিন্তু দিল্লির ফাইনালে উঠতে কোনও অসুবিধে হয়নি। উল্টো দিকে, আমিরশাহি আইপিএলের আগে পর্যন্ত মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস (Chennai Super Kings) ছিল আইপিএলের ‘জার্মানি’। তাদের মতো ধারাবাহিকতা কোনও টিম দেখাতে পারেনি আইপিএলে। কিন্তু গতবার শোচনীয় পারফর্ম করে ধোনির সিএসকে। আটটা টিমের মধ্যে হয় সপ্তম। যা সিএসকের নিরিখে অভাবনীয়! শুধু তাই নয়, ধোনির নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। আসলে টিমের মতোই গত আইপিএল খারাপ গিয়েছিল ধোনির। বলাবলি চলতে থাকে, ধোনি যদি আইপিএল খেলবেন বলেই ঠিক করে থাকেন, তা হলে সেটা মন দিয়ে খেলছেন না কেন? কেন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে তৈরি করছেন না?
সব কিছুর উপযুক্ত জবাবি মঞ্চ হতে পারে শনিবারের মুম্বই। মর্যাদার পরীক্ষার আগে ধোনি অবশ্য রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। এ দিন আইপিএলের সম্প্রচারকারী সংস্থা স্টার স্পোর্টস একটা ভিডিও বার করেছে ধোনিকে নিয়ে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ক্যাপ্টেন কুল স্ট্রিট ক্রিকেট খেলছেন, বল করছেন! যে ভিডিওয় আরসিবির এবি ডে’ভিলিয়ার্স ধোনিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘অবশ্যই চাইব, তুমি কিপিং না করে বল করো! তা, নতুন ভূমিকায় এলে নাকি?’ যুদ্ধের আগের দিন প্র্যাকটিসে টিমের ফিজিওকে নিয়ে ইতালীয় বোলিং গেম খেললেন! যার পোশাকি নাম ‘বোক্কি’! ধোনি উপস্থিত থাকা মানে, তাঁর ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে চর্চা চলবেই। চললও। অনেকেই বলাবলি করছিলেন, আইপিএলে এটাই ধোনির শেষ বছর হতে চলেছে কি না? সিএসকে সিইও কাশী বিশ্বনাথন পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, “মনে হয় না।” ঋষভ পন্থ– তিনি আবার কোনও যুদ্ধেই যাননি। বরং বলেছেন, “মাহিভাইয়ের সঙ্গে টস করতে যাব সেটা বাড়তি স্পেশ্যাল অনুভূতি।” দেখা যাক, দেখা যাক শনিবাসরীয় মহাযুদ্ধে কে জেতে? মনে রাখবেন মাঠটার নাম ওয়াংখেড়ে। যেখানে বিশ্বজয়ের দশ বছর পূর্তির এখনও দশ দিনও হয়নি!