Image default
খেলা

নারাইন-তাণ্ডবে মিরাজদের উড়িয়ে ফাইনালে কুমিল্লা

বিপিএলের ইতিহাসে ও বাংলাদেশের মাটিতে দ্রুততম অর্ধশতক। কমপক্ষে ৫০ রানের ইনিংসে বিপিএলে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটের ইনিংস। মিরপুরে সুনীল নারাইনের এমন তাণ্ডবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কাছে রীতিমতো উড়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রামের ১৪৮ রান কুমিল্লা পেরিয়ে গেল ৪৪ বল ও ৭ উইকেট বাকি রেখেই। প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারা দলটি পেল দাপুটে জয়, নিশ্চিত হলো ফাইনাল খেলাও।

ইনিংস উদ্বোধন করতে এসে নারাইন অর্ধশতক করেছেন মাত্র ১৩ বলে। শেষ পর্যন্ত করেছেন ১৬ বলে ৫৭ রান। ৩৫৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করার পথে ৬টি ছয়ের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছয়। নারাইনের পর ঝড় তুলেছেন ফাফ ডু প্লেসি ও মঈন আলীও। ডু প্লেসি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৩ বলে ৩০ রান করে, মঈন করেছেন ২৩ বলে ৩০ রান।

অথচ চট্টগ্রামের বোলিংয়ের শুরুটা হয়েছিল দারুণ আশাজাগানিয়া। প্রথম বলেই শরীফুল ইসলামের বাড়তি বাউন্সের বলে ক্যাচ তোলেন লিটন দাস, সেটি সামনে ডাইভ দিয়ে দারুণভাবে নেন আকবর আলী। তবে সে ওভারের তৃতীয় বলে ছয় মেরে যে ঝড় শুরু করেন নারাইন, আউট হওয়ার আগপর্যন্ত থামেনি সেটি। প্রথম ওভারেই শরীফুলকে মারেন আরও ২টি চার।

পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ যেন নারাইনের তোপে অসহায় হয়ে পড়েন। স্ট্রাইক পেয়ে ৪ বলে ৩টি ছয়ের সঙ্গে নারাইন মারেন ১টি চার। সবগুলোই লং-অফ আর কাভার অঞ্চল দিয়ে। নারাইন ঝড়ে প্রথম ২ ওভারেই কুমিল্লা তোলে ৪৩ রান, প্রথম ১২ বলে বিপিএলে যা সর্বোচ্চ।

পরের ২ ওভারে স্ট্রাইক না পেলেও পঞ্চম ওভারে স্ট্রাইক পেয়েই আফিফকে প্রথম ২ বলে চার ও ছয় মারেন নারাইন। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারের প্রথম বলে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে ছয় মেরে অর্ধশতক পান তিনি। এক বল পর আরেকটি চার মারার পর অবশ্য ক্যাচ তুলে ফিরেছেন এ বাঁহাতি। ইমরুলের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ৩৩ বলে ওঠে ৭৯ রান।

তবে পাওয়ারপ্লে-তে বিপিএল সর্বোচ্চ ৮৪ রান ঠিকই তোলে কুমিল্লা। ইমরুল কায়েস ২৪ বলে ২২ রান করে বেনি হাওয়েলের বলে ফিরলেও কুমিল্লাকে এগিয়ে নেন মঈন ও ডু প্লেসি। দুজনের জুটিতে ২৭ বলেই ওঠে ৫৪ রান। ১২.৫ ওভারেই জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লার।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া চট্টগ্রামের ইনিংসের রঙটা বদলেছে কয়েকবার। একাদশে ফেরা উইল জ্যাকস ঝোড়ো শুরু করেন, তবে ৯ বলে ১৬ রান করে শহীদুল ইসলামের বলে ক্যাচ তোলেন তিনি। এরপর তানভীর ইসলামের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার চ্যাডউইক ওয়ালটন। চট্টগ্রাম পুরো ব্যাকফুটে চলে যায় মূলত ষষ্ঠ ওভারে কুমিল্লার ষষ্ঠ বোলার হিসেবে মঈন আসার পর। সে ওভারে পরপর ২ বলে জাকির হাসান ও শামীম হোসেনকে ফেরান মঈন, ওভারে কোনো রানও দেননি।

মঈনের পরের ওভারে টার্ন ও বাউন্সে বোকা বনে যান চট্টগ্রাম অধিনায়ক আফিফ, শর্ট এক্সট্রা কাভার থেকে সামনে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন তানভীর। ৫০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা চট্টগ্রামকে এরপর টানেন বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক দুই অধিনায়ক মিরাজ ও আকবর আলী। ষষ্ঠ উইকেটে দুজন মিলে তোলেন ৪০ বলে ৬১ রান। ১২ তম ওভারে মঈনের ওপর চড়াও হয়েই চট্টগ্রামের ইনিংসের গিয়ার বদলান আকবর, সে ওভারে ওঠে ১৬ রান।

২০ বলে ৩৩ রান করার পর আবু হায়দারের বলে খাড়া ওপরে ক্যাচ তুলে ফেরেন আকবর। এরপর মিরাজের সঙ্গে মিসফিল্ডে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে ফেরেন হাওয়েল, ফলে শেষদিকে সেভাবে রানের গতি বাড়াতে পারেনি চট্টগ্রাম। ৩৮ বলে ৪৪ রান করে থামতে হয় মিরাজকেও, ফেরেন শহীদুলের বলে ক্যাচ তুলে। শেষ দিকে মৃত্যুঞ্জয়ের ৯ বলে ১৫ রানের ক্যামিওতে ১৪৮ রান পর্যন্ত যায় চট্টগ্রাম। যদিও ইনিংসে বাকি ছিল ৫ বল।

তবে নকআউট ম্যাচ বলে চাপ থাকার কথা ছিল কুমিল্লার ওপর। আগের ম্যাচে তো বরিশালের বিপক্ষে ১৪৩ রান তাড়া করতে গিয়ে তারা থেমেছিল ১৩৩ রানে, চট্টগ্রামকে নিশ্চয়ই আশা জুগিয়েছিল সেটিও।

সুনীল নারাইন সে আশার গুড়ে বালি ছিটিয়ে দিলেন!

Related posts

এশিয়ান গেমসে জাপানের গ্রুপে সাবিনারা, চীনের গ্রুপে জামালরা

News Desk

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিষিদ্ধ হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা

News Desk

আর্জেন্টিনা আমার ওপর নির্ভরশীল নয় : মেসি

News Desk

Leave a Comment