একটা সময় নিত্যই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসতেন। সাবেক পরিচালক হলেও এখন স্টেডিয়াম পাড়ায় অনিয়মিত মুখ গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। অনেক দিন পর গতকাল বিসিবির কোনো আয়োজনে হাজির হয়েছেন সাবেক এই অধিনায়ক। স্বাধীনতা দিবসে সাবেক ক্রিকেটারদের প্রদর্শনী ম্যাচই তার আগমনের কারণ।
তবে তুষার ইমরান-রাজিন সালেহদের ২২ গজের লড়াই ছাপিয়ে গতকাল ম্যাচটার আলো কেড়ে নিয়েছেন দুই নারী আম্পায়ার। বিসিবি একাডেমি মাঠে জ্যৈষ্ঠ আম্পায়ার সৈয়দ মাহবুবউল্লাহর সঙ্গে নান্নু-পাইলটদের ম্যাচটা পরিচালনা করেছেন সাথিরা জাকির জেসি ও ডলি রানি সরকার।
চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরুর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ার, স্কোরার আনার উদ্যোগের কথা বলেছিলেন বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই গতকাল জেসি-ডলিকে দেখা গেল আম্পায়ারের ভূমিকায়।
সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার জেসির আগ্রহ অবশ্য ম্যাচ রেফারি হওয়ার দিকে। তবে ইফতেখার রহমান মিঠুর ডাক পেয়ে গতকাল বাংলাদেশের ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারদের নতুন যাত্রায় শামিল হলেন জেসি। ২০০৯ সালে সালমা খাতুন, পান্না ঘোষসহ অনেক নারী ক্রিকেটার বিসিবির আয়োজিত আম্পায়ারিং কোর্স করেছিলেন।
জেসি জানালেন, ৫-৬ বছর আগে নারী প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কয়েক জন সাবেক নারী ক্রিকেটার। তবে সেটির ধারাবাহিকতা পরে আর দেখা যায়নি। এখন স্কুল ক্রিকেট থেকে নারী আম্পায়ারদের সুযোগ দিতে চায় বিসিবি।
আম্পায়ার্স কমিটির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল জেসি বলেন, ‘মেয়েরা এখন সবখানে আম্পায়ারিং করছে, বিশ্বকাপেও করছে, ছেলেদের ক্রিকেটেও করছে। আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু ভাই, ২৬ মার্চের জন্য ফোন করে ডাকলেন। বললেন, তোমরা এখন থেকে শুরু করো। আমারও মনে হয়, শুরু করার জন্য আজকে (গতকাল) সবচেয়ে সেরা দিন ছিল। সবাই ছিল, সবাই দেখল মেয়েরা কেমন আম্পায়ারিং করে। এখানে আসলে যত বেশি ম্যাচ করবে, তত অভিজ্ঞতা বাড়বে।’
অন ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন জেসি, তৃতীয় আম্পায়ার ছিলেন ডলি রানি সরকার। কিংবদন্তিদের মাচ পরিচালনা করে রোমাঞ্চিত জেসি বলেন, ‘নান্নু ভাই, রফিক ভাই, পাইলট ভাইরা খেলেছেন, আমি আম্পায়ারিং করছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা ব্যাপার।’
সাবেক ক্রিকেটার ডলি রানি সরকার এখন বিকেএসপির কোচ। প্রায়ই বিকেএসপিতে ছেলেদের প্রিমিয়ারের লিগের প্রস্তুতি ম্যাচ, মেয়েদের প্রস্তুতি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেন তিনি। জেসির মতে, বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি সুযোগ দিলে অনেক নারী ক্রিকেটারই আগ্রহী হবেন আম্পায়ারিংয়ে। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘এখন যেহেতু বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি চিন্তা করেছে, নিঃসন্দেহে দারুণ বিষয়। অনেকেই আছে এখানে আগ্রহী। সুযোগ দিলে অনেকেই করবে।’