সেই যে ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জেতা তার পর সোনালী ট্রফিটা ব্রাজিলের কাছে যেন সোনার হরিণ। প্রতিবারই ফেভারিটের তকমা গায়ে মেখে হেক্সা মিশনে আসা। আর প্রতিবার-ই বিদায় নেওয়া রাজ্যের হতাশা সঙ্গী করে। এবার অবশ্য সফলতা পেতে ব্রাজিল শুধু সমর্থকদের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছে না। সরাসরি মাঠে হাজির থেকে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন ব্রাজিলের সাবেক গ্রেটরাও।
২০০২ বিশ্বকাপ জয়ী কাফু, রোনালদো ও রবার্তো কার্লোসরা ভিআইপি গ্যালারিতে বসে পরিপাটি হয়ে বাড়তি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকছেন। যেমনটা সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে-ই দেখা গেছে। সঙ্গে থাকা সর্বকনিষ্ঠ কাকাও পিছিয়ে থাকবেন কেন? যাদের সরব উপস্থিতি বেশ কয়েকবার ধরা পড়েছে টেলিভিশনের পর্দায়। তাতে শুধু খেলোয়াড়রাই নন, উদ্দীপ্ত হয়েছেন সমর্থকরাও। অবশ্য এমন উৎসাহ খুব করে প্রয়োজনও যখন নাকি নেইমারকে ছাড়া ব্রাজিলকে গ্রুপপর্বে খেলতে হচ্ছে।
অথচ এবার সম্পূর্ণ ফিট হয়ে কাতার বিশ্বকাপে এসেছিলেন নেইমার। প্রথম ম্যাচে ঠিকমতো মাঠে নামতে পারলেও সুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়তে পারলেন কই? একের পর এক আঘাতের যন্ত্রণায় এক পর্যায়ে চোট পেয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
এই অবস্থায় সেলেসাওদের যাতে মনোবল হারিয়ে না যায় সেই মন্ত্রই জপে দিতে হচ্ছে সাবেকদের। ২০০২ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জেতা রোনালদো নাজারিও নেইমারকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে যেমন বলেছেন, ‘তোমার মেধা এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। বিশ্বের সব জায়গা থেকে তোমার জন্য ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রয়েছে। বর্তমান অবস্থা থেকে ফিরে আসতে হবে, যে যাই বলুক না কেন। তোমাকে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে হবে। আরও শাণিত হয়ে, গোলের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে।’
এর আগেও নেইমার বার বার চোটে পড়েছেন। আবার সময় করে ফিরেও এসেছেন। তবে এবার ধরেই নেওয়া হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ তার ক্যারিয়ারের শেষ। দল শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিলেও হেক্সা মিশন সফল করতে প্রাণভোমরাকে ভীষণ প্রয়োজন। তাই তো অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দিচ্ছেন রোনালদো, ‘কোনও সমালোচনাকে গায়ে মেখো না। তুমি যে ফুটবলের আইডল তা মনে রেখো। ব্রাজিল তোমাকে ভালোবাসে। তোমার দেশ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছো, তা উদযাপন করো। তুমি ফিরেই আসবেই। আশা করছি, সব সমালোচনা একসময় শেষ হয়ে যাবে।’
দোহায় রোনালদো-কাফুরা এসেছেন পোশাকি পরিচয়ে। তবে তাদের শেষ পরিচয় একটাই- ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ী সদস্য। এখন পূর্বসূরীদের প্রেরণায় উত্তরসূরীরা ২০ বছর পর ষষ্ঠ শিরোপা এনে দিতে পারলেই হয়।