কাতার বিশ্বকাপ যত শেষের দিকে যাচ্ছে তত প্রতিযোগিতা আরো কঠিন হচ্ছে আর দলগুলোর বাড়ছে ট্রফি ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা। বিশেষ করে অঘটনের জন্ম দিয়ে এগিয়ে আসা দলগুলোর জন্য সেই স্বপ্ন আরো বড় হয়ে দেখা দেয়, মরক্কো তেমনই একটি দল। এর আগে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল এ দুই দল। সেই ম্যাচে খেলার শুরুতেই এক গোল দিয়ে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। এরপর আর কোনো গোল হয়টি সেই ম্যাচে। ফলে জয় পায় পর্তুগাল। জয়সূচক গোলটি করেন পর্তুগিজ দলের তারকা খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার-বেলজিয়ামের মতো দলকে টপকে শীর্ষস্থানে থেকে রাউন্ড-১৬-তে আসার পর স্পেনকে রুখে দিয়ে টাইব্রেকারে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে আসা মরক্কোর জন্য স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু। অন্যদিকে পর্তুগালও কম যায় না। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে পরাজয় এবারের আসরে চার ম্যাচে পর্তুগিজদের প্রথম হার। এর পরের ম্যাচে শেষ ষোলোতে এসে যেন সুইজারল্যান্ডের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে জয়। আজ দিনের প্রথম ও টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের খেলায় আল থুমামা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পর্তুগাল ও মরক্কো।
এদিকে গত ১২ বছরে প্রথম ও চতুর্থ আফ্রিকান দল হিসেবে শেষ আট নিশ্চিত করা মরক্কোর জন্য এখন পুরো আফ্রিকান অঞ্চলই আশা দেখছে, সঙ্গে যোগ হয়েছে আরব সমর্থকরা। এর আগে ১৯৮৬ সালে একবারই অ্যাটলাস লায়ন্সরা বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে খেলেছিল। এনিয়ে গত সাতটি ম্যাচের ছয়টিতেই তারা কোন গোল হজম না করে মাঠ ছেড়েছে। বিশ্বকাপে তারা এ পর্যন্ত টানা পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম শক্তিশালী রক্ষণভাগ হিসেবে মরক্কোকেই বিবেচনা করা হচ্ছে। গ্রুপ পর্বে ইউরোপিয়ান দুই শীর্ষ দল ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়াম ও শেষ ম্যাচে স্পেনকে রুখে দেওয়ার পর এবার পর্তুগালকেও আটকে দিতে তারা মুখিয়ে আছে।
অন্যদিকে আইকনিক অধিনায়ক রোনালদোকে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে শেষ ষোলোতে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠ নামা ছিল পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দোস সান্তোসের সাহসী সিদ্ধান্ত। কিন্তু রোনালদোর পরিবর্তে নামা ২১ বছর বয়সি স্ট্রাইকার গনসালো রামোস কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়ে এবারের আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। এই সাফল্যের পর রোনালদোর পরবর্তী যুগে রামোসের ওপর এখন থেকেই কেউ কেউ ভরসা করতে শুরু করে দিয়েছেন। এর আগে ১৯৬৬ সালে সাবেক কিংবদন্তি ইউসেবিও ছিলেন অনুপ্রেরণা, যার কল্যাণে পতুগাল প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলেছিল। ইউরো ও নেশন্স লিগ জয়ী দলটি এখনো বিশ্বকাপ শিরোপা খরা কাটাতে পারেনি। যুব পর্যায়ে সব সাফল্য পেলেও সিনিয়র দলটি এখনো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি।
সম্ভাব্য দল
পর্তুগাল (ফরমেশন ৪-৩-৩)
কস্টা, ডালোট, পেপে, দিয়াজ, গুয়েরো, বার্নার্দো, নুনেজ, ওতাভিও, ব্রুনো, রামোস, ফেলিক্স।
মরক্কো (ফরমেশন ৪-৩-৩)
বুনু, হাকিমি, সেইস, আগুয়ার্ড, মাজরাউয়ি, উনাহি, আমরাবাত, আমাল্লাহ, জিয়েচ, এন-নেসরি, বুফাল।