পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয়ার্ধের দুই গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনাকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এর মাধ্যমে বার্সার পোলিশ তারকা রবার্ট লেওয়ান্ডভস্কির জন্য মিউনিখে ফেরার রাতটা স্মরণীয় হলোনা।
মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনাতে ফরাসি ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজের হেডে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এর চার মিনিট পরেই লিরয় সানের দুর্দান্ত চিপে ব্যবধান দ্বিগুন করে বায়ার্ন। জার্মান এই এ্যাটাকারের অসাধারণ এই গোলটি অনেকদিন বায়ার্ন সমর্থকদের মনে গেঁথে থাকবে। এর আগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক তারকা সানে এক গোল করার পাশাপাশি আরও এক গোলের যোগান দিয়েছিলেন। ঐ ম্যাচটিতেও বায়ার্ন ২-০ গোলে জয়ী হয়ে এবারের মৌসুমের শুভ সূচনা করে।
কাল প্রথমার্ধ্বের প্রায় বেশিরভাগ সময় দাপট দেখিয়েছে বার্সেলোনা। একের পর এক আক্রমণে বায়ার্নের রক্ষনভাগকে বিপদে ফেলেছিল তারা। কিন্তু লেওয়ান্ডভস্কির মিসের কারনে এগিয়ে যাওয়া হয়নি। ৫৪ মিনিটে সানে কাতালান গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান। এর চার মিনিট আগে জসুয়া কিমিচের কর্ণার থেকে হেডের সাহায্যে বায়ার্নকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হার্নান্দেজ।
ম্যাচ পূর্ববর্তী অনুশীলনের সময় বায়ার্ন সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন লেওয়ান্ডভস্কি। বায়ার্ন অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমি মনে করি লেওয়ার জন্য এটা খুবই আবেগঘন একটি ম্যাচ ছিল। অনেকটাই তার বাড়ি ফেরার মত। কারন এখানে সে ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল সময় কাটিয়েছে। কাল ভাগ্য তার সহায়ক ছিলো না। ১৯ মিনিটে তার ভলিতে গোল না হওয়াটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের ছিল। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আজ আমরা রক্ষণভাগে দারুণ পারফর্ম করেছি।’
১৯ মিনিটে পেদ্রির বাড়ানো পাস থেকে নয়্যারকে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি লেওয়ান্ডভস্কি। তার শটটি অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এর এক মিনিট পরেই পোলিশ তারকা আবারও গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার তার হেড সহজেই তালুবন্দী করেন নয়্যার।
এই মৌসুমে লিডস থেকে বার্সেলোনায় আসার পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনহা কাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন। ২৭ মিনিটে তার নেওয়া মাটি কামড়ানো শটটি অল্পের জন্য নয়্যারকে পরাস্ত করতে পারেনি। প্রথমার্ধ্বের একেবারে শেষ মুহূর্তে আলফোনসো ডেভিস বক্সের একেবারে সামনে উসমানে ডেম্বেলেকে ফাউল করলে বার্সা পেনাল্টির জোড়ালো আবেদন করেছিল। কিন্তু রেফারি ড্যানি ম্যাককিলে তা সরাসরি নাকচ করে দেন। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে ডেভিস স্পষ্টভাবেই ডেম্বলের পায়ে আঘাত করেছেন।
বিরতির পর বায়ার্ন কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যান মার্সেও সাবিটজারের পরিবর্তে লিওন গোরের্তজাকে মাঠে নামান। আর এতেই গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। গোরের্তজার রকেট গতির একটি শট রুখতে গিয়ে স্টেগান কর্ণার উপহার দেন বায়ার্নকে। আর সেই কর্ণার থেকেই স্বাগতিকদের লিড এনে দেন হার্নান্দেজ।
ম্যাচ শেষে গণমাধ্যমে নাগেলসম্যান বলেছেন, ‘লেওয়ান্ডভস্কি খুব ভাল খেলেছে। বায়ার্নের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বলা যায় দলের সবাই খুশি সে আজ গোল পায়নি। কিন্তু কখনো কখনো সত্যিকার অর্থেই সে বিপদজনক হয়ে উঠেছিল। ম্যাচ শেষে সে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। কিন্তু এখন সে ভিন্ন একটি ক্লাবে খেলছে এবং প্রতিনিয়ত তাকে আমাদের নজরে রাখতে হচ্ছে।’
আগামী ২৬ অক্টোবর ফিরতি ম্যাচে ক্যাম্প ন্যু মুখোমুখি হবে দুই দল।