করোনাভাইরাসের কারণে আসা অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতিটি যেন শাপে বরই হলো মুলতান সুলতানসের জন্য। স্থগিত হওয়ার আগে পাকিস্তান সুপার লিগে খেলা পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটিতে জেতা মুলতান, বিরতির পর শুরু হওয়া সাত ম্যাচে হেরেছে মাত্র একটিতে। আর তাতেই মিলেছে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হওয়া ফাইনাল ম্যাচে চারবারের ফাইনালিস্ট পেশোয়ার জালমিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে ৪৭ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে মুলতান, জিতে নিয়েছে পিএসএলের ষষ্ঠ আসরের শিরোপা।
পিএসএলের আগের পাঁচ আসরে কখনও ফাইনালেও খেলতে পারেনি মুলতান। এবার প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে তাতেই বাজিমাত মোহাম্মদ রিজওয়ানের দলের। অন্যদিকে দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এ নিয়ে গত চার আসরে তিনবার ফাইনালে হারল পেশোয়ার। হাই স্কোরিং ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে জোড়া ফিফটির সুবাদে ৪ উইকেটে ২০৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় মুলতান। ম্যাচ মূলত সেখানেই শেষ। পরে এই রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে পেশোয়ার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করতে পেরেছে তারা।
মুলতানের বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার কৃতিত্ব শোয়েব মাকসুদ ও রাইলি রুশোর। উদ্বোধনী জুটিতে আসা ৬৮ রানের ভূমিকাও এতে কম নয়। দুই ওপেনারই খেলেন ত্রিশ ছাড়ানো ইনিংস। নবম ওভারে আউট হওয়ার আগে শান মাসুদ করেন ৩৭ রান, অধিনায়ক রিজওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৩০ রান। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ঝড় তোলেন মাকসুদ ও রুশো। তারা দুজন মিলে মাত্র ৪৪ বলে যোগ করেন ৯৮ রান। ইনিংসের ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৫ চার ও ৩ ছয়ের মারে মাত্র ২১ বলে ৫০ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ব্যাটসম্যান রুশো।
আর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে দুইশ পার করান মাকসুদ। টানা দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটিতে ৩৫ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। যেখানে ছিল ৬ চার ও ৩ ছয়ের মার। শেষ দিকে দুই ছয়ের মারে ৫ বলে ১৫ রানের ক্যামিও খেলে দেন খুশদিল শাহ। এ রান তাড়া করতে নেমে কখনোই ফেবারিট মনে হয়নি পেশোয়ার জালমিকে। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন ফর্মে থাকা ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। পরের ওভারে আউট হন আরেক ওপেনার কামরান আকমল। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩৬ রান।
এরপর খানিক চেষ্টা করেছিলেন শোয়েব মালিক, শেরফান রাদারফোর্ড, রভম্যান পাওয়েলরা। মালিক ও পাওয়েলের ২৯ বলের চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসে ৬৬ রান। পাওয়েল ১৪ বলে ২৩ ও মালিক আউট হন ২৮ বলে ৪৮ রান করে। শেরফানের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১৮ রান। মুলতানের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ইমরান তাহির। এছাড়া ২টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন ইমরান খান ও ব্লেসিং মুজুরাবানি।
ফাইনালে অপরাজিত ফিফটি করে ফাইনালসেরার পাশাপাশি, পুরো আসরে ৪২৮ রান করে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন শোয়েব মাকসুদ।