জাগতিক নিয়মে সবকিছুরই শেষ আছে। চিরন্তন সত্যি জেনেও কখনও কখনও কথাটা মানতে কষ্ট হয়। এই যেমন রজার ফেদেরার। তিনি যে টেনিস ছেড়ে দিচ্ছেন, সেই ঘোষণা এক সপ্তাহ আগেই দিয়েছিলেন। লেভার কাপে শেষচিহ্ন এঁকে নেওয়ার সব আয়োজনও ছিল প্রস্তুত। তারপরও এই বাস্তবতা মানতে কষ্ট হয়- ফেদেরারের জাদুমাখানো ব্যাকহ্যান্ড আর দেখতে পাওয়া যাবে না! আর ফেডএক্স নিজে? যাকে ভালোবেসে, হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের এতটা পথ পাড়ি দেওয়া, সেই টেনিস কোর্টে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলা হবে না? ফেদেরার নিজেকে ধরে রাখেন কী করে! চোখে নেমে এলো অশ্রুধারা। আর প্রিয় খেলোয়াড়ের চোখ গড়ানো জল দেখে তার সতীর্থ থেকে শুরু করে ভক্তদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছিল লন্ডনের আকাশ।
৪১ বছর বয়সী ফেদেরারকে আর পাওয়া যাবে না টেনিস কোর্টে। প্রদর্শনী ম্যাচে হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁঝ আর থাকবে না তার টেনিসে। শুক্রবার রাতে জীবনের শেষ ম্যাচে জুটি বেঁধেছিলেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে। যদিও শেষটা হার দিয়ে হয়েছে। তাতে কী! ২৫ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে ফেদেরার মানেই তো ছিল সুন্দর টেনিসের প্রদর্শনী, মুগ্ধতার বৃষ্টিতে অবিরাম ভিজে যাওয়া। হারে কী-ইবা আসে যায়!
লেভার কাপ দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। কতটা কষ্ট হয়েছে সিদ্ধান্ত নিতে, সেটিও জানিয়েছিলেন ফেডএক্স। কিন্তু সেই ঘোষণা ছিল এক ভিডিও বার্তায়, যেটির সঙ্গে আসলে গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে থেকে বিদায় নেওয়ার কোনও তুলনা চলে না। আর তিনি যেভাবে বিদায় নিলেন, সেটা তাকেই মানায়। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় যাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, টেনিস বিশ্বে যাদের ডাকা হয় ‘বিগ ফোর’ বলে; ফেদেরারের বিদায়ে একমঞ্চে দেখা মিললো সবার। সুইস তারকা তো বটেই, ছিলেন নাদাল, নোভাক জোকোভিচ ও অ্যান্ডি মারে।