দাপট দেখিয়ে খেলল ফ্রান্স। কিন্তু একের পর এক সুযোগ মিস করলো। এরই মধ্যে স্রোতের বিপরীতে গোল করে এগিয়ে গেল হাঙ্গেরি। বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা পড়েছিল মহাদুশ্চিন্তায়। যদিও পরে গোলটি শোধ করতে পেরেছে। কিন্তু ঘরের মাঠের হাঙ্গেরিকে হারাতে পারেনি ফ্রান্স। শনিবার বুদাপেস্টের ফেরেঙ্ক পুসকাস স্টেডিয়ামে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচটিতে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দুই দল।
ম্যাচের ১৪ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো ফ্রান্স। জোড়া বিপদ আটকে দেয় হাঙ্গেরি। প্রথমে করিম বেনজেমাকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। বেনজেমার ২০ গজ দূর থেকে নেয়া নিচু শট ফিরিয়ে দেন হাঙ্গেরি গোলরক্ষক পিটার গালেক্সি। ফিরতি বলটি পেয়ে সহজতম সুযোগটি মিস করেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান। খালি জাল রেখে সোজা গালেক্সির হাতে বল মেরে দেন ফরাসি স্ট্রাইকার।
৩০ মিনিটে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণে এমবাপে বক্সের ডান দিকে বল রিসিভ করে চতুর ফ্লিকে বল দিয়েছিলেন বেনজেমাকে। কিন্তু বেনজেমা নিয়ন্ত্রণহীন ভলিতে সেটি বাইরে দিয়ে মেরে দেন। ৩৪ মিনিটে হাঙ্গেরি ডিফেন্ডারদের সামনে দারুণ ড্রিবলিংয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন এমবাপে নিজেই। কিন্তু দুর্বল শট নিয়ে বসেন গোলরক্ষকের সামনে গিয়ে। পোস্টের বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় বল।
গোলশূন্যভাবে ম্যাচের তখন প্রথমার্ধ প্রায় শেষের পথে। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটের খেলা চলছে। এমন সময়ে এসে উল্টো ধাক্কা খেয়ে বসে ফ্রান্স। বলতে গেলে একক কৃতিত্বে গোল করেন আতিলা ফিওলা। বেঞ্জামিন পাভার্ডের ভুলে বল পাসে বল পেয়ে যান রোলান্ড সাল্লাই। তিনি সেটা চোখের পলকে দিয়ে দেন ফিওলাকে। ফিওলা সেই বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে সামনে থেকে রাফায়েল ভারানেকে কাটিয়ে নেন চোখ ধাঁধানো এক কোনাকুনি শট। হুগো লরিস ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি বল।
এগিয়ে থাকা হাঙ্গেরি দ্বিতীয়ার্ধে আরও উজ্জীবিত চেহারায় হাজির হয়। সমান তালে আক্রমণ চালাতে থাকে। এর মধ্যে ৫৯ মিনিটে আরও একবার দুর্ভাগ্য সঙ্গী হয় ফ্রান্সের। হাঙ্গেরির দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোড়ালো এক শট নিয়েছিলেন উসমান ডেম্বেলে। সেটি গালেক্সিকে পরাস্ত করলেও ডানদিকের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। অবশেষে ৬৬ মিনিটে গোলের দেখা পায় বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ডানদিক থেকে এমবাপের ক্রস হাঙ্গেরির সেন্টার ব্যাক উইলি ওরবানের পা দিয়ে ক্লিয়ারের সুযোগ ছিল, কিন্তু তিনি সেটা মিস করে ফেলেন। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা গ্রিজম্যান বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে জালে জড়ান বল।
৮২ মিনিটে হাঙ্গেরিকে বাঁচান গোলরক্ষক গালেক্সি। এবারও সংঘবদ্ধ আক্রমণে ছুটে গিয়েছিল ফ্রান্স। বদলি হিসেবে নামা অলিভার জিরুর কাছ থেকে এমবাপে বল পেয়ে একদম সামনে থেকে বুলেট গতির এক শট নিয়েছিলেন, কোনোমতে দুই গ্লাভসে সেটি রুখে দেন গালেক্সি। শেষ পর্যন্ত আর তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি ম্যাচে ১৫ শট নেয়া ফ্রান্স, ৫ শট নেয়া হাঙ্গেরি বল দখলে অনেকটা পিছিয়ে থেকেও ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
এই ড্রয়ের পরও অবশ্য ‘এফ’ গ্রুপে শীর্ষে আছে ফ্রান্স। ২ ম্যাচে এক জয়, এক ড্রতে ৪ পয়েন্ট তাদের। এক ম্যাচে এক জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। দুই ম্যাচে এক ড্রয়ে ১ পয়েন্ট পাওয়া হাঙ্গেরি তিন নম্বরে। এক ম্যাচ খেলে হার সঙ্গী করা জার্মানি আছে চার নম্বর অবস্থানে।