Image default
খেলা

বাংলাদেশের শিয়াকত আলী, কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তালিকাভুক্ত রেফারি

বিশ্বের ৩৬ জন রেফারি, ৬৯ জন সহকারী রেফারি ও ২৪ জন ভিডিও ম্যাচ অফিশিয়াল খেলা পরিচালনার দায়িত্বে আছেন কাতার বিশ্বকাপে। এই রেফারিদের মধ্যে সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ১০ জনের একজন বাংলাদেশের মোহাম্মদ শিয়াকত আলী। কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তালিকাভুক্ত রেফারি তিনি। বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগের দিন হোয়াটসঅ্যাপে পিন্টু রঞ্জন অর্ককে শুনিয়েছেন সেই গল্প

কাতারে সবাই আমাকে কুরা হাকাম শেখ আলী নামে চেনে। আরবি কুরা অর্থ ফুটবল, হাকাম মানে বিচারক। মানে ফুটবল মাঠের বিচারক। যাহোক, আমি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ছেলে।

মরিয়মনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রাঙ্গুনিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছি। পরে ভর্তি হয়েছিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
 

মনের দুঃখে বিদেশে

স্কুল ও কলেজের হয়ে ফুটবল খেলেছি। সাঁতার, দৌড়, হাই জাম্প, লং জাম্পও খেলেছি। ইচ্ছা ছিল বড় খেলোয়াড় হব। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তা আর হয়ে ওঠেনি। ২০১২ সালের দিকে একটি সরকারি চাকরির পরীক্ষায় লিখিত, ভাইভার বৈতরণি পার হয়েছিলাম ভালোভাবে। তার পরও আমার কাছে ঘুষ চাইল। দিতে পারিনি বলে চাকরিটাও হলো না। মনের দুঃখে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ২০১৩ সালের শুরুতে শ্রমিক ভিসায় পাড়ি জমালাম কাতারে। দোহায় এসে মাস চারেকের মতো ছিলাম ভগ্নিপতি খোরশেদ আলমের বাসায়। তাঁরা আমাকে ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত থাকতে উৎসাহিত করে।

খেলতে নয়, খেলা পরিচালনা করতে চাই

তখন ইউরোপের বিখ্যাত ক্লাব বার্সেলোনার ট্যালেন্ট হান্ট কর্মসূচি চলছিল দোহায়। তাতে ১০ দিন প্রশিক্ষণ নিয়ে কোচ হিসেবে নিয়োগ পাই। স্কুলে স্কুলে সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় খুঁজে বের করাই কাজ। এই কর্মসূচিতে আসা কাতারের রেফারিদের বলি, আমি দেশে খেলাধুলা করতাম। রেফারিংও করেছি। এখানে সুযোগ পেলে রেফারিং করতে চাই।

তাঁরা বললেন, এ বিষয়ে তাঁদের কিছুই করার নেই। কিন্তু কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের রেফারিং বিভাগের সিইও চাইলে ভাগ্যের শিকে খুললেও খুলতে পারে। পরে তাঁদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে যোগাযোগ করলাম সেই সিইও সৈয়দ নাজি আল জোয়ানির সঙ্গে। তিনি সব শুনে ভ্রু কুঁচকালেন, ‘যে দেশ থেকে এসেছ সেখানকার ফুটবলের স্ট্যাটাস তো ভালো নয়। তুমি কিভাবে রেফারিং করবে?’ বললাম, ‘দেখুন, আমি খেলতে আসিনি। খেলা চালাতে এসেছি। আমাকে একটা সুযোগ দিন। চেষ্টা করব আপনার সুনাম রক্ষা করতে। ’ তিনি ফোন নম্বর টুকে রাখলেন।

ছয় মাস বিনা বেতনে

হঠাৎ একদিন অপরিচিত একটা নম্বর থেকে ফোন এলো। ওপর প্রান্ত থেকে সেই সিইও বললেন, ‘তোমাকে আমরা নিতে পারি। তবে শর্ত আছে। আমাদের এখানে ছয় মাস প্রশিক্ষণ ও ক্লাস করতে হবে এবং সেটা বিনা বেতনে। পরে পরীক্ষায় উতরালে তুমি সুযোগ পাবে। ’ সাতপাঁচ না ভেবে রাজি হয়ে গেলাম। মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করলাম। সেই সঙ্গে চলল কঠোর প্রশিক্ষণ। ২০১৩ সালের শেষের দিকে এলো চূড়ান্ত পরীক্ষার পালা। সেবার রেফারি হতে কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে পরীক্ষা দেন বিভিন্ন দেশের ৬৫ জন। সেখানে প্রথম হলাম। এর তিন দিন পর সহকারী রেফারি হিসেবে নিয়োগপত্র পেলাম কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকে।

Related posts

অ্যারন রজার্স তার ফুটবল মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই

News Desk

নিক্সের জোশ হার্ট এই অফসিজনে জেজে রেডিকের সাথে তার তিন-পয়েন্ট শুটিং ঠিক করতে ‘ইতিমধ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’

News Desk

জেট প্রতিরক্ষা ‘সম্ভবত খুব ভাল এবং খুব আরামদায়ক’: গার্ডনার সস

News Desk

Leave a Comment