রাজনৈতিক বৈরিতায় ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে নেই কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক। তার ওপর ইরানের চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে আলাদা বিতর্ক তৈরির চেষ্টায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশন। নারী মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইরানের পতাকা বিকৃতি ঘটিয়ে তোপের মুখে পড়েছিল। তাই বলা যায় উত্তপ্ত এক আবহেই দুই দল মঙ্গলবার রাত ১টায় মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
মাঠের বাইরের উত্তপ্ত আবহটা অবশ্য সংবাদ সম্মেলনেও টের পাওয়া গেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র কোচ গ্রেগ বেরহাল্টার ও কোচ টাইলার অ্যাডামসকে মার্কিন মুলুকের বৈষম্য, অভিবাসী আইন নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হয়েছে। ইরানি এক রিপোর্টার তো যুক্তরাষ্ট্রের নামটা উচ্চারণ করেছেন খানিকটা বিকৃত করেই।
পতাকা বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ক্ষমা প্রার্থনা করে বেরহাল্টার বলেছেন, ‘আমি এটা নিশ্চিত করতে চাই যে খেলোয়াড় থেকে শুরু করে স্টাফদের কেউ এ বিষয়ে অবগত নয়। অনেক সময় অনেক কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শুধু এটাই করতে পারি সবার তরফ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা। যেহেতু ম্যাচটা নকআউট। তাই আমাদের মনোযোগটা এখন ম্যাচের দিকে।’
রাজনৈতিক বৈরিতার প্রভাব ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও পড়তে দেখা গেছে। গ্রুপ পর্বে ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে ২-১ গোলে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছিল। যাকে ওই সময় বলা হচ্ছিল ‘মাদার অব অল ফুটবল ম্যাচেস’। ওই ম্যাচটায় ইরান দল রাজনৈতিকভাবে প্রভাবে উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নেমেছিল বলে সবার ধারণা। তখনকার ওই ম্যাচটার স্মৃতি মনে আছে যুক্তরাষ্ট্র কোচের। তাই ওই ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন তিনি, ‘তখন ডাচ টেলিভিশনের জন্য কমেন্ট্রি দিচ্ছিলাম। শুরু থেকেই ম্যাচটা দেখছিলাম, ওরা জয়ের জন্য ছিল ক্ষুধার্ত। ইরানকে দেখে মনে হচ্ছিল তারা সেটার জন্য মুখিয়ে। আজকের ম্যাচেও আমাদের একই মানসিকতা থাকবে।’
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা বিকৃতিতে মেন্টাল গেম হিসেবেই দেখেন ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ। আর এসব চাপের মুখে ম্যাচ জেতার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী, ‘আমার এখনও বিশ্বাস আছে, এসব মেন্টাল গেমের মুখোমুখি হয়েই আমরা ম্যাচ জিততে পারবো।’
নকআউটে যেতে গ্রুপ ‘বি’ র এই ম্যাচ জিতলেই হবে যুক্তরাষ্ট্রের। ইরানের শুধু ড্র করলেই চলবে।