সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০২১ সালে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। তারপর আর টেস্ট দলে বিবেচনাই করা হয়নি মুস্তাফিজুর রহমানকে। চলতি বছর বিসিবির লাল বলের চুক্তিতেও নেই তিনি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের প্রতি যে অনীহা রয়েছে, সেটিও প্রকাশ করেছেন মুস্তাফিজ। গণমাধ্যমে বলেছেন, সীমিত ওভারের ফরম্যাটেই বেশি মনোযোগ দিতে চান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজেও তাই বাংলাদেশ দলে নেই কাটার মাস্টার।
তবে টেস্টকে ‘না’ বলায় মুস্তাফিজের ওপর বেজায় চটেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। আইপিএলে ব্যস্ত এই বাঁহাতি পেসারকে একহাত নিয়েছেন বিসিবির এই পরিচালক। এবং স্পষ্ট করে সুজন জানিয়েছেন, চুক্তিতে না থাকলেও মুস্তাফিজকে টেস্ট খেলতে হবে। আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই বাংলাদেশের টেস্ট দলে রাখা হবে তাকে।
দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলা মুস্তাফিজকে এখনই শ্রীলঙ্কা সিরিজে ডাকা হবে না। গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে সুজন বলেছেন, ‘যেহেতু ওকে আমরা ছুটি দিয়ে দিয়েছি, আইপিএল খেলছে, এখন ওকে ডিস্টার্ব করতে চাই না। আমরা চাই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে একটা টেস্ট হলেও খেলুক।’ বাংলাদেশের হয়ে ১৪ টেস্ট খেলেছেন মুস্তাফিজ, পেয়েছেন ৩০ উইকেট। তবে এখানেই লাল বলের ক্রিকেটে তার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটাতে চায় না বিসিবি।
শনিবার মুস্তাফিজের ওপর ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে জাতীয় দলে বিভাজনের রাস্তাও খুলে দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম চাইতে পারবেন শুধু সিনিয়র ক্রিকেটাররা। তরুণেরা বিশ্রাম নিতে পারবেন না। যদিও বিসিবির সভাপতি বলেছিলেন, ক্রিকেটাররা কে কোন ফরম্যাটে খেলবেন, সেটি লিখিত দিয়েছেন। সেখানে টেস্টের প্রতি আগ্রহ দেখাননি মুস্তাফিজ।
তবে সুজনের মতে, এ নিয়ম শুধু সিনিয়রদের জন্য। দেশের হয়ে খেলা বাদ দিয়ে বিশ্রাম, ছুটি, আইপিএল খেলার উদাহরণ বাংলাদেশেও কম নয়। কিন্তু এসব শুধু সিনিয়র তথা সাকিব, তামিমরাই করতে পারবেন। যেমনটা তামিম টি-২০ খেলেন না, সাকিব হুটহাট টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ান।
এমন কিছু করার অধিকার নেই মুস্তাফিজ-লিটনদের মতো তরুণদের। গতকাল টিম ডিরেক্টর সুজন বলেছেন, ‘পাপন ভাই বলেছিলেন, খেলোয়াড়েরা যে ফরম্যাট খেলতে চায়, এ নিয়ে আলাপ করতে পারে। সেটা সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কথাটা বলেছেন, সবার ক্ষেত্রে না। এখন যদি জয় (মাহমুদুল হাসান জয়) বলে আমি ওয়ানডে খেলব আর টেস্ট খেলব না, এটা কি ঠিক হলো নাকি? মুস্তাফিজের আসলে বয়স কত? কয় দিন ধরে খেলে? ও তো সাকিব না, তামিম না, মাশরাফি বা মুশফিক না, যারা এত বছর ধরে বাংলাদেশকে তিন ফরম্যাটে সার্ভিস দিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সাকিব-তামিমদের বয়স ৩৪-৩৫। তাদের এখন বিরতি প্রয়োজন, তারা এটার যোগ্য। কিন্তু লিটন দাস তো বিশ্রামের যোগ্য না। লিটন যদি সাকিব-তামিম হতো, বলতাম সে-ও বিশ্রামের যোগ্য।’
আইপিএল বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা, সবচেয়ে জনপ্রিয় টি-২০ লিগ। মোটা অঙ্কের অর্থের হাতছানি রয়েছে। সুজন বলছেন, ‘উপার্জন ভালো হলেও দেশের ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিতে হবে আগে। মুস্তাফিজকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সুজন বলেছেন, ‘সাদা বলে হয়তো টাকার ব্যাপারটা বেশি। আইপিএল খেললে হয়তো ২-৪ কোটি টাকা পাবে। ক্রিকেট কি টাকার চেয়ে বড় নয়? দেশ কি টাকার চেয়ে বড় নয়?’