গত বছর আইপিএলে ছিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের নেট বোলার। সেখান থেকে সরাসরি মূল দলেও জায়গা করে নেন। খেলেনও কয়েকটি ম্যাচ। খুব আহামরি কোনো পারফর্ম করতে না পারলেও গতির ঝড় তুলে নজর কাড়েন সবার। সেই সুবাদে পরবর্তীতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের নেট বোলার হিসেবেও সুযোগ পেয়ে যান। বলছি কাশ্মিরি যুবক উমরান মালিকের কথা।
তার বোলিংয়ে এতটাই মুগ্ধতা যে, এ বছর আইপিএলের মেগা নিলামের আগেই উমরান মালিককে রিটেইন করে নেয় হায়দ্রাবাদ। কেন তাকে রেখে দিয়েছে ফ্রাঞ্জাইজিটি, সেটার গুরুত্ব এবার মাঠের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ২২ বছর বয়সী এই তরুণ।
এইতো গত সপ্তাহে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে তার একটি ডেলিভারি ছিল ঘণ্টায় ১৫৩.১ কি/মি। যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গতির বল। এবারের আসরের তার প্রতিটি বলই ঘণ্টায় ১৪৫-১৫০ কি/মি করে হচ্ছে। যা দেখে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের প্রধান কোচ টম মুডি ও পেস বোলিং কোচ ডেল স্টেইন। অন্যদিকে, পাকিস্তানের কিংবদন্তী ক্রিকেটার রশিদ লতিফের মতে, ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকা হতে পারেন উমরান মালিক। এই কাশ্মিরি তরুণের মধ্যে এর সব বৈশিষ্টই আছে।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে জম্মু-কাশ্মিরের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ঘটে উমরান মালিকের। এর পরের মাসে ২৭ ফেব্রুয়ারি লিস্ট এ ক্রিকেটেও তার অভিষেক হয়ে যায়। জম্মু-কাশ্মিরের হয়ে অংশ নেন বিজয় হাজারে ট্রফিতে। ১৯৯৯ সালের ২২ নভেম্বর কাশ্মিরের শ্রীনগরে জন্ম উমরানের। ভারতের এ দলের হয়েও খেলেছেন তিনি।
গতকাল নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রশিদ লতিফ বলেন, আসন্ন বছরগুলোতে ভারতীয় দলের জন্য নিজেই নিজের নাম তৈরি করতে পারবেন উমরান মালিক। বিশেষ করে সাদা বলের ক্রিকেটে তার পেস ও গতি অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের এক্স ফ্যাক্টরও হতে পারেন এই তরুণ। এমনটাই মত পাকিস্তানি কিংবদন্তির।
রশিদ লতিফ বলেন, ‘আইপিএলের পর পরই তারা (ভারত) আবারও আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে। সামনে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি পিচে সে সহজেই এশিয়ান ব্যাটারদের বিপদে ফেলতে পারবে। সেই কন্ডিশনে উমরান খুবই কার্যকরী বোলার হতে পারে। কারণ, বর্তমান সময়ে ব্যাটারদের এমন পেস বোলিংয়ের মুখোমুখি খুব কমই হতে হয়।’
গতির কারণে রান একটু বেশিই খরচ করে ফেলছেন উমরান। চলতি আইপিএলে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে ৯.৬১ ইকোনোমিতে রান দিয়েছেন ১৭৩। তবে সেটি নিয়ে অতটা চিন্তিত নন হায়দ্রাবাদের কোচ টম মুডি। তিনি বলেন, ‘দিনশেষে যখন আপনি এই ফরম্যাটে ঘণ্টায় ১৫০ কি/মি গতিতে বল করছেন তখন অন্তত এটা আশা করতে পারেন না যে, আপনি রান দেবেন না। উইকেটের পেছন দিয়ে অনেক রান সে দেবে। কিন্তু বিষয়টি এমন নয় যে সে মার খাচ্ছে।’
এ সময় কাশ্মিরি এক্সপ্রেসকে প্রশংসায় ভাসিয়ে টম মুডি বলেন, ‘উমরান খুবই এক্সাইটিং ক্রিকেটার। এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তাকে বল করতে দেখা সবার জন্য আনন্দদায়ক। এখনো তার ক্যারিয়ার শুরুর দিকে। সে প্রতিদিনই শিখছে।’
গতকাল (১৫ এপ্রিল) কেকেআরের বিপক্ষে ম্যাচে দলটির অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে বোল্ড করেন উমরান মালিক। বলটির গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৮ কি/মি। যা দেখে ডাকআউটে বসে থাকা ডেল স্টেইনকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।