এশিয়া কাপের সুপার ফোরের লড়াইয়ের ২য় ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারালো পাকিস্তান। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৮১ রান সংগ্রহ করে রোহিত শর্মার দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১ বল বাকি থাকতে চিরপ্রতিদ্বন্ধী ভারতের দেওয়া ১৮২ রানের টার্গেট পূর্ণ করে পাকিস্তান। ২০ বলে ৪২ রানের পাশাপাশি ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়ায় ম্যাচ সেরা হন মোহাম্মদ নেওয়াজ।
এ দিন জয়ের জন্য ১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের ৪র্থ ওভারে দলীয় ২২ রানে অধিনায়ক বাবর আযমকে হারায় পাকিস্তান। তবে ক্রিজের অপরদিক সামলে ফখর জামানকে নিয়ে রানের গতি বাড়াতে থাকেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইংসের ৮ম ওভারে চাহালের বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজ ঘরে ফেরেন ফখর জামান। আউট হবার আগে তার ব্যাক্তিগত সংগ্রহ ছিলো ১৮ বলে ১৫ রান। তবে রিজওয়ানকে সাথে নিয়ে রানের ধারা অব্যাহত রাখেন চারে ব্যাট করতে নামা মোহাম্মদ নেওয়াজ। ১৬ তম ওভারে নেওয়াজকে আউট করে তাদের ৭৩ রানের জুটি ভাংগেন ভুবেনস্বর কুমার। আউট হওয়ার আগে ২০ বলে ৪২ রান করেন এ ব্যাটার। জয়ের জন্য যখন ২০ বলে ৩৫ রানের প্রয়োজন তখন, হার্দিক পান্ডিয়ার বলে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ওপেনিং-এ নেমে ৫১ বলে ৭১ রান করেন তিনি। শেষ দিকে খুসদিল শাহ-এর ১১ বলে ১৪ রান ও আসিফ আলির ৮ বলে ১৬ রানের উপর ভর করে ১ বল হাতে রেখে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। যদিও জয়ের জন্য ২ রান বাকি থাকতে আর্শদীপ সিং এর বলে এলবিডাব্লিউ হোন আসিফ আলি। তবে এতে ৫ উইকেট জয় পায় বাবর আযমরা।
ভারতের হয়ে ভুবেনস্বর কুমার, চাহালে, হার্দিক পান্ডিয়া, রবি বিশনৈ ও আর্শদীপ সিং ১টি করে উইকেট নেন।
এর আগে টসে জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিং-এ পাঠায় বাবর আযম। তবে তার সিদ্ধান্তকে ভুলই প্রমাণ করতে বসেছিলেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা আর লোকেশ রাহুল। ইনিংসের শুরু থেকেই পাকিস্তানি বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই ওপেনার। মাত্র ৫ ওভারে বিনা উইকেটেই দলের ফিফটি রান তুলেন রোহিত আর রাহুল মিলে। প্রথম ওভারেই নাসিম শাহকে আক্রমণ করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত। এক চার আর এক ছয়ে প্রথম ওভার থেকেই আসে ১১ রান। পরের ওভারে হাসনাইনের বলে প্রথমবার পরাস্ত হলেও পরে তাকেও সীমানা ছাড়া করেন রোহিত। সঙ্গীকে দেখে ঝড় তোলেন রাহুলও। তৃতীয় অভারে একাই মেরেছেন দুই ছক্কা। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে এসে পাকিস্তানকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন হারিস রউফ। তার বলে রোহিতের ব্যাটের টপ এজে লেগে ওপরে ওঠা ক্যাচ নেন খুশদিল শাহ। ১৬ বলে ২৮ রান করেই ফেরেন ভারতের অধিনায়ক। ৫.১ ওভারে ৫৪ রানে প্রথম উইকেট পড়ে ভারতের।
রোহিতের বিদায়ের পর বেশিক্ষন টিকতে পারেননি রাহুলও। ঠিক ছয় বল পর শাদাব খানের বলে নেওয়াজের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ওপেনার। ১ চার ও ২ ছ্যে ২০ বলে ২৮ রান করে বিদায় নেন রাহুল। ৬২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত। চার নাম্বারে নেমে আজ খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। ১০ বলে ১৩ রান করেই মোহাম্মদ নেওয়াজের বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। ৯১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত। ক্রিজের অন্যপ্রান্তে ভারতের রানের চাকা সচল রাখেন বিরাট কোহলি। তার ভসাথে এবার সঙ্গী হিসেবে পান ঋষভ পান্তকে। তবে সেও টিকলেন না বেশিক্ষণ। ১২ বৈলে ১৪ রান করেই শাদাব খানের বলে আসিফ আলীর কাছে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন পান্ত।
তবে ভারতকে সবচেয়ে বেশি হতাশা উপহার দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেছেন মাত্র ২ বল। মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে আউট হয়ে শূণ্য রানেই ফিরেছেন ড্রেসিং রুমে। এরপর দীপক হুদা ক্রিজে এসে রান বাড়াতে চেষ্টা করেছেন। তবে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি তিনিও। ১৪ বলে ১৬ রান করে ফিরেছেন হুদা। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় নাসিম শাহকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়েছেন নেওয়াজের হাতে।
তবে পাকিস্তানকে পেয়ে দীর্ঘদিন পর জ্বলে ওঠা কোহলি যেন আজ মনে করাচ্ছিলেন তার সেই পুরোনো ফর্মকে। অন্য সবার যাওয়া আসার ভেতরেই ৪ চার আর এক ছয়ে ৩৬ বলেই নিজের ফিফটি তুলে নেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক। শেষ ওভারে এসে রান বাড়ানোর চেষ্টায় ৪৪ বলে ৬৬ রান করে আসিফ আলীর হাতে রানআউট হয়ে ফেরেন কোহলি। শেষ দুই বলে রবি বিষ্ণয় দুই চারে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮১ রান।
পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খান ২ টি এবং নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন, হারিস রৌফ ও মোহাম্মদ নেওয়াজ ১টি করে উইকেট নেন।