নেপালের সঙ্গে হতাশার ড্রয়ে শুরু করা বাংলাদেশের মেয়েরা অবশেষে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন।
আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভুটানকে তাঁরা উড়িয়ে দিয়েছেন ৬-০ গোলের বড় ব্যবধানে। বাংলাদেশের হয়ে জোড়া গোল করেছেন তহুরা খাতুন ও শাহেদা আক্তার। ১টি করে গোল ঋতুপর্ণা চাকমা ও মারিয়া মান্দার।
পরশু নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ভালো খেলেও গোলমুখ খুলতে পারেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ নারী দল। সে কারণেই কিনা আজ একাদশে বদল আনেন কোচ গোলাম রব্বানী। শামসুন্নাহার জুনিয়রের বদলে একাদশে ঢোকেন শাহেদা আক্তার, মার্জিয়া আক্তারের বদলি আনুচিং চাকমা। আর নীলুফার ইয়াসমিনের বদলে খেলেছেন আফিদা খন্দকার।
বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে কখনোই ভুটানের কাছে না হারার আত্মবিশ্বাস ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা গোলের জন্য মরিয়া ছিলেন শুরু থেকেই। গোলপোস্টের নিচে বেশির ভাগ সময় অলস সময় কেটেছে গোলরক্ষক রুপনা চাকমার। অন্যদিকে, আক্রমণ সামলাতে দিশেহারা ছিলেন ভুটানের ডিফেন্ডাররা।
ম্যাচের ২ মিনিটে তহুরার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও গোলটিতে তহুরার কৃতিত্বের চেয়ে ভুটানি ডিফেন্ডার কারমা ওয়াংমার ‘অবদান’ই বেশি। বক্সের মধ্যে জটলা থেকে পাওয়া বল ক্লিয়ার করতে যান ওয়াংমা। কিন্তু সেই বল তহুরার পায়ে লেগে ঢোকে জালে। গোল করে তহুরাও যেন কিছুটা অবাক!
ম্যাচে চোখে পড়ার মতো কিছু ড্রিবলিং করেছেন শাহেদা। বল পায়ে ড্রিবলিংয়ের পাশাপাশি বলে তাঁর নিয়ন্ত্রণও ছিল দারুণ। কক্সবাজারের এই তরুণী নিজে দুটি গোল করেছেন, একটা করিয়েছেন তহুরাকে দিয়ে।
ডান প্রান্ত দিয়ে বারবার আক্রমণে ওঠা শাহেদা প্রথম গোল পান ৪১ মিনিটে। মারিয়া মান্দার বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে করেন ২-০। বিরতির ঠিক আগমুহূর্তে তহুরার উদ্দেশে শাহেদা বাড়িয়ে দেন অসাধারণ এক ক্রস। তাতে মাথা ছুঁয়ে তহুরা করেন ৩-০। প্রথমার্ধে ৩ গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে ভুটানের জালে আরও ৩ গোল দিয়েছে বাংলাদেশ। ৪৭ মিনিটে শাহেদার আলতো চিপ অনায়াসেই লুফে নিতে পারতেন ভুটানের গোলরক্ষক কারমা ইউদেন।
কিন্তু হাস্যকরভাবে তাঁর হাত ফসকে বল ঢুকে যায় জালে (৪-০)। এমন গোল হজমের পর ৫৫ মিনিটের সময় ভুটানের কোচ ঘালি তানাকা মায়া ইউদেনকে মাঠ থেকে তুলে নেন। তাঁর বদলে নামেন দ্বিতীয় গোলরক্ষক কিনজাং দেমা। গোলরক্ষক বদলেও অবশ্য কোনো লাভ হয়নি। এরপর বাংলাদেশ আরও দুই গোল দিয়েছে ভুটানের জালে।
ম্যাচের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন গোলটি করেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ভুটানের ডিফেন্ডার শেরিং লাদেনের কাছ থেকে বল নিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শট, গোলরক্ষক কিনজাংয়ের মাথার ওপর দিয়ে বল ঢোকে জালে। গোল খেয়ে অসহায়ের মতো চেয়ে রইলেন গোলরক্ষক কিনজাং। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে ভুটানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেছেন মারিয়া মান্দা।