মেসির ক্যারিয়ার শুরুতে একটা দৃশ্য প্রায়ই দেখা যেতো। তিনি খেলার মাঝে মাঠে দাঁড়িয়ে বমি করছেন। তার এই অসুস্থতা তার আশেপাশের সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। অনেকেই মনে করতেন তার ক্যারিয়ার লম্বা হবে না। কিন্তু ৩৪ বছর বয়সেও তিনি মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন দুর্দান্তভাবে। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু তার একটা মাত্র অভ্যাস পরিবর্তনে। কি সেটা? আজ আমরা তাই জানবো।
ছোটবেলা থেকেই মেসি ফাস্ট ফুড এবং কোমল পানীয় ভক্ত। বিশেষ করে কোকাকোলা খাওয়ার অভ্যাস নিয়ে তার পরিবারেও ভীষণ দূঃচিন্তা ছিলো। একবার পেপ গার্দিওলা টিম মিটিং শুরু করলে মেসি কোক খাওয়ার অনুমতি চান। পেপ তাকে অনুমতি না দিলে মেসি মিটিং ছেড়ে বেড়িয়ে যান। এবং সবাইকে হতভম্ব করে দিয়ে তিনি কোক নিয়ে মিটিং এ বসেন। মেসির কোকের আসক্তিতে বিরক্ত হোন তিনি ।
পেপ গার্দিওলা নু ক্যাম্পের আশেপাশে থেকে সব ড্রিকিং মেশিন সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। বার্সেলোনার সহকারী কোচ রেক্সাস বলেন, যতটা উচিত তারচেয়ে অনেক বেশি পিজ্জা আর কোক মেসির পেটে গেছে। মেসি নিজেও বলেছিলেন, তার প্রিয় খাবার, মিলানেসা। এই আর্জেন্টাইন খাবারটি গরুর মাংস এবং বিস্কুটগুড়া দ্বারা তৈরি হয়। এই খাদ্যভ্যাসের কারনে, মাঠে এবং খেলার আগে বমি করতেন তিনি। তার এই অভ্যাস নিয়ে এমনকি ম্যারাডোনাও বিরক্তি প্রকাশ করেন।
একসময় মেসি বুঝতে পারেন, এটা তার ক্ষতি করছে। এভাবে চললে তার ক্যারিয়ার লম্বা হবে না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পেরেছি আপনি ১৯ বছর বয়সে যা খেতে পারবেন, ২৭ বছর বয়সে তা পারবেন না। এরপরেই তিনি ফাস্ট ফুড এবং কোমল পানীয় খাওয়া একদম বাদ দেন। এরবদলে তিনি মেট পান করা শুরু করেন।
মেট হচ্ছে লাতিন আমেরিকান পানীয় যাতে কোনও চিনি ব্যবহার করা হয় না। মাংস বাদ দিয়ে তিনি অলিভ ওয়েল দিয়ে মাখানো সালাদ, তাজা ফল, শুকনা ফল, বাদাম এবং সবজি বেশি করে খেতে শুরু করেন। এরফলে তার মাসল ক্লান্তি দুর হয়ে যায়। নতুন মাসল তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে তিনি ইনজুরি মুক্ত থাকতে পারেন। সাথে পেশিগুলো থাকে তরুণ।
এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার তার বমি করা একদম বন্ধ যায়। এভাবেই একটা অভ্যাস পরিবর্তনে মেসির ৩৪ বছর বয়সেও পুর্বের মতোই নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন উচ্চ থেকে উচ্চতর স্থানে।